॥ আলমগীর মানিক ॥
প্রবেশন পাওয়া আসামী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজেকে সংশোধনসহ আদালতের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করায় আসামীকে প্রকাশ্য আদালতেই উপহার দিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন বিজ্ঞ আদালত। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান এর বিজ্ঞ আদালত এই নজির সৃষ্টি করেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান গত ০৮.০১.২০২০ তারিখের এক রায়ে রাঙামাটির দেবাশীষ নগর নিবাসী ২৫ বছর বয়সের এক যুবককে (সংগত কারনে নাম পরিচয় প্রকাশ করা হলনা) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ এর অধীন একটি মামলায় আসামীর ৬ মাসের কারাদন্ড স্থগিত করে আসামীকে ৫টি শর্তে প্রবেশন দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রবেশন কর্মকর্তা আলপনা চাকমার প্রদত্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবং আসামী, আসামীর মা-স্ত্রী ও কৌসুলি এ্যাড. মামুনুর রশীদ মামুনের বক্তব্য শ্রবণ করে ও আসামীর আচরনে সন্তুষ্ট হয়ে রায় বাস্তবায়ন কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ মনজুরুল ইসলাম ও আসামীর কৌসুলি মামুনুর রশিদ মামুন সূত্রে জানা যায় উক্ত আসামী ছিলেন নিরক্ষর কিন্তু তার মা ও স্ত্রী লিখতে পড়তে জানেন। আদালত উক্ত আসামীকে প্রবেশন প্রদান কালে অন্যান্য সদাচরনের শর্তের সাথে মায়ের নিকট অক্ষর জ্ঞান, শব্দ ও বাক্য গঠন শিখবেন মর্মে শর্ত দেন। আসামী সে মোতাবেক মায়ের কাছে লেখাপড়া শিখেন। আদালতে তিনি নিজে বর্ণ ও শব্দ লিখে দেখান। এতে বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে আসামীকে, তার মাকে এবং প্রবেশন কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ প্রদান করেন। আদালতের বিচারক তাঁর নিজের পক্ষ থেকে আসামীকে একটি কলম সৌজন্য উপহার প্রদান করেন।
প্রবেশন কর্মকর্তা আলপনা চাকমা জানান, প্রথমে অপরাধীদেরকে যদি প্রবেশন দিয়ে অপরাধ জগত থেকে রক্ষা করা যায় তাহলে সমাজে অপরাধ কমে আসবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে এই মামলার কৌসুলী এডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন জানিয়েছেন, আসামীকে শুধু জেল জরিমানা দিয়ে সবসসয় শুধরানো যায় না। মাঝে মধ্যে কিছু অনুপ্রেরনামূলক মাধ্যমে আসামীর চিরাচরিত অভ্যাস বদলানো সম্ভব। যা এই মামলায় জেল জরিমানা না করে প্রবেশনের কিছু শর্ত দিয়ে আসামীকে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়ে বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রমাণ করেছেন।