সংঘর্ষ-সংঘাত পরিহার করে সম্প্রীতির বন্ধনে এগিয়ে আসি: শান্তিচুক্তির ২৪ বছর পূর্তিতে বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি

511

DSC_0062
২ ডিসেম্বর, ২০২১, ঢাকা ব্যুরো অফিস, দৈনিক রাঙামাটি।

স্টাফ রিপোর্ট: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, শান্তি চুক্তির পর এ অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন গতির সঞ্চার হয়েছে। এ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। পার্বত্যবাসীর উন্নয়নে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রভৃতি। এতে একদিকে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে, অপরদিকে জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে। রাঙ্গামাটিতে মেডিক্যাল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শান্তি চুক্তির সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পার্বত্য এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর পারস্পরিক সহনশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য আসুন সকলে সংঘর্ষ-সংঘাত পরিহার করে সম্প্রীতির বন্ধনে এগিয়ে আসি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শান্তি আর উন্নয়ন। আমরা যারা শান্তি চাই, তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৪তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন—পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। মুখ্য আলোচক ছিলেন তথ্য কমিশনের সচিব সুদত্ত চাকমা। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

DSC_0239

মন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি আজ ২৪ বছরে পদার্পণ করেছে। শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়েছে। ১৫টি আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। ৯টি ধারা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য এলাকার যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব এলাকায় ১০ হাজার ৮৯০টি পরিবারের মধ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। আরও ৪০ হাজারটি সোলার হোম সিস্টেম এবং ২ হাজার ৫০০টি সোলার কমিউনিটি হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ চলমান রয়েছে। ৪ হাজার ৫০২টি পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নারী ও শিশুদের মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা ও শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসচ্ছল ও প্রান্তিক পরিবারের নারী উন্নয়নে গাভী পালন প্রকল্প, প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চ মূল্যের মসলা চাষ প্রকল্প, ফলের বাগান সৃজন, কফি ও কাজু বাদাম চাষ এবং ইক্ষু চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পসহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অনগ্রসর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ এ সময় তিনি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এর আগে শান্তি চুক্তির ২৪ বছর পালন উপলক্ষে দিনের শুরুতে ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে মন্ত্রী, সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সংখিপ্ত র‌্যালি করে জাতির পিতা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

সম্পাদনা- শামীমুল আহসান
ঢাকা ব্যুরো প্রধান, দৈনিক রাঙামাটি।