সড়কের সৌন্দর্য পূণরুদ্ধারে জেলাপ্রশাসনের মোবাইল কোর্ট

539

DSC_0026wci&

স্টাফ রিপোর্টার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : হ্রদ ও পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে কাপ্তাই হ্রদের তীরে দাঁিড়য়ে থাকা পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে বর্তমান সময়ে অগণিত পর্যটকের আগমণ ঘটছে। হ্রদ বেষ্টিত অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত অন্যতম এই পর্যটন শহর রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন আরো বাড়াতে নানামুখি পদক্ষেপ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের নানামুখি পদক্ষেপের ফলে অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরের সাম্প্রতিক সময়ে আশানুরূপ পর্যটকের আগমণ ঘটেছে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে। শহরের অভ্যন্তরেই রাজবাড়ি, বৌদ্ধ মন্দির, ফিসারী বাধ, দোয়েল চত্বর, ডিসি বাংলো এলাকা, তথাপি ঝুলন্ত ব্রীজ দেখার জন্য নিজেদের ব্যক্তিগত ও ভাড়ায় নিয়ে আসা গাড়ি দিয়ে ঘুরেই শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন পর্যটকরা। কিন্তু এক শ্রেণীর নাগরিকের অসচেতনতার কারনে রাঙামাটিতে আগত পর্যটকদের সৌন্দর্য অবলোকনে যেমনি ব্যাঘাত ঘটছে তেমনি ফুটপাত দখলেরও মহোৎসবে মেতে উঠেছেন তারা। এসব থেকে মুক্তি পেতে সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বেশ কয়েকবার দাবি উঠে।

এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কয়েকবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এসব অবৈধ দখলদারকে হটিয়ে দিলেও অদৃশ্য শক্তির জোয়ারে তারা আবারো দখলে লিপ্ত হয়। এতে করে ডিসি বাংলো, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, এসপি অফিস-বাংলো, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অফিস, রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজ, সিনিয়র মাদ্রাসা, সোনালী ব্যাংক, রাঙামাটি প্রেসক্লাব, সড়ক ও জনপথ অফিস, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী কার্যালয়সহ জনগুরুত্বপূর্ণ অফিস গুলোতে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির উভয় পার্শ্বে, ইট, রেখে এবং বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রী ও ঠেলাগাড়ি রেখে ফুতপাতগুলোর অবস্থা অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। অবশেষে এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে আবারো মাঠে নেমেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে শহরের পুরাতন বাস ষ্টেশনস্থ দোয়েল চত্বর হয়ে এসপি অফিস সংলগ্ন প্রধান সড়কের দুই পাশে অবস্থিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফেরদোসী বেগম। জেলা প্রশাসনের পেশকার স্বপন দাশ, সহকারি ছোটনসহ পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রধান সড়কের উভয় পার্শ্বের জায়গা দখলকারিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আজকে আপনাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে যাচ্ছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আবারো আসবো, এই অবস্থা যদি আবারো প্রত্যক্ষ করি তাহলে আপনাদেরকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি কারাদন্ডও প্রদান করা হবে। আপনারা নিজ উদ্যোগে এসব জিনিসপত্র সরিয়ে নিবেন অন্যথায় আমি পৌরসভার মাধ্যমে এসব জিনিসপত্র জব্দ করে নিয়ে যাবো। স্থানীয়রা এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে নিজেদের ভূল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ আর করবেনা বলে অঙ্গীকার করেন।

নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফেরদৌসী বেগম জানিয়েছেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষজন চলাফেরা করে থাকে। অন্যতম পর্যটন শহরের মধ্যে এই ধরনের একটি সৌন্দর্যমন্ডিত সড়কের এহেন বেহাল দশা আমাদের সবার জন্যই অত্যন্ত বিভ্রান্তীকর এবং সৌন্দর্যহানিকরও বটে। আমাদের এখানে বেড়াতে আসা সন্মানিত পর্যটকবৃন্দ এসব দেখে রাঙামাটি ঘুরে গিয়ে ভালো মন্তব্য করবে না। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে এই সড়কটির সৌন্দর্যমন্ডিত চেহারা পুনঃরোদ্ধার করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি জানান, আমরা চাই সচেতন নাগরিকরা তাদের নিজেদের ভূল শুধরাক। তাই এবারের মতো জরিমানা না করে শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ওয়ার্নিং দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে এই একই অবস্থা আবারো প্রত্যক্ষ করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো সতর্কতা ছাড়াই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান