॥ কবির হোসেন ॥
৬৩ বছরেও দুঃখ ঘোচেনি দুর্গম চাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এই বিদ্যালয় থেকে হাজারো শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবন শুরু করে শিক্ষিত হওয়ার পর চাকুরী করে এখন অবসরে। কিন্তু বিদ্যালয়টি পায়নি পাঠদানের সঠিক পরিবেশ। কাপ্তাই উপজেলার ৩ নং চিৎমরম ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত চাকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হলেও নেই কোনো পাকা ভবন।
স্বাধীনতা পূর্ব ১৯৬০ সালে দূর্গম এলাকায় শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে তদানিন সময়ে বেসরকারিভাবে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এই বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের আওতায় আসে। কিন্তু সরকারি হবার পরও পেরিয়ে গেছে আরো ৫০ বছর। এখন টিনসেট ভবনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এই স্কুলের নেই কোন পাকা ভবন। এছাড়া শ্রেণী কক্ষও অপ্রতুল। চিৎমরম বাজার হতে ৭কিঃমিঃ দক্ষিণে হল চাকুয়া প্রাইমারী স্কুল। দূর্গম পাহাড়ী ঐ স্কুলে যেতে একমাত্র বাহন হল মোটরসাইকেল। বর্ষার দিনে মেঠোপথে যেতে স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বড়ধরনের বেগপেতে হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হাসান জানান বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সর্বমোট ৮৩ জন শিক্ষার্থী এবং ৪ জন শিক্ষক রয়েছে । টিন সেট দেওয়া একটি ভবনের ৩ টি কক্ষে পাঠদান হয়। এবং আর ১ টি কক্ষ অফিস ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্ষা মৌসুমে ক্লাস রুমে পানি পড়ে, ফলে শ্রেণী কার্যক্রম ব্যহত হয়। তাই স্কুলের জন্য একটি নতুন ভবন জরুরী প্রয়োজন।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সুইহ্লা মং মারমা বলেন, আমাদের এ গ্রামে ২ শ’ মারমা পরিবারের বসবাস। এই গ্রামে কোন হাই স্কুল নেই। আছে শুধু ১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো অত্যন্ত জরাজীর্ণ টিন সেট ঘরে আমাদের শিশুরা ক্লাস করে এবং শিক্ষকরাও ক্লাস করান। কিন্তু এখানে একটি পাকা ভবন জরুরী দরকার।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন দূর্গম চাকুয়া পাড়ায় সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন। এসময় তিনি চাকুয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি জানান আমি নিজে দেখেছি এই স্কুলের জরাজীর্ণ অবস্থা। বিষয়টি আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।
কাপ্তাই উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার আচার্য্য বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পিইডিপি-৪ এর আওতায় চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে সকল বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। চাকুয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও আশা করছি শীঘ্রই ভবনের বরাদ্দ চলে আসবে। এবিষয়ে কর্তৃপক্ষ খুবই আন্তরিক।