॥ ইকবাল হোসেন ॥
রাঙামাটিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ সহ বিভিন্ন দাবীতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি দিয়েছে রাঙামাটি জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। রবিবার সকালে রাঙামাটি জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর উত্তম কুমার দাশের হাতে উক্ত স্বারকলিপি তুলে দিয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এসময় রাঙামাটি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফারুক আহমেদ সাব্বির, সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর সুমন, সহ-সভাপতি নূরুল হুদা, এমদাৎ হোসেন মানিক, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন সাকু সহ জেলা ছাত্রদলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তারা স্বারকলিপিতে উল্লে করেছে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সোচ্চার। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দুই মাসের অধিক সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও লক ডাউনের কারণে স্থবির হয়ে আছে বাংলাদেশসহ বিশ্ব অর্থনীতি। তাই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয় হয়ে সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতনাদি মওকুফ করে দিলে তা হবে মানবতার জন্য এক উজ্জল দৃষ্টান্ত।
সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে টেলিভিশন, অনলাইনে কিছুটা কার্যক্রম চালু রাখলেও সেটি সবার কাছে পৌঁছাচ্ছে না। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজারেরও বেশি কলেজ এর বাইরে আছে। এক জরিপে দেখা গেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস চালানো সম্ভব নয়। এমনকি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরও অনলাইনে ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সঙ্গত নেই। এটির অন্যতম কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল পরিবার থেকে আসে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বর্তমানে গ্রামের বাড়ীতে আছে।
তাদের অনেকেরই স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট ডাটা ক্রয়ের আর্থিক সামর্থ্য নেই। এর উপর অনেক এলাকায় নেটওয়ার্ক সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করে শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করে, সেটাও করোনা মহামারীর কারণে সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, মূল্যবান ডিভাইস কেনাও অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব, এর উপর অনেক স্থানে নিয়মিত বিদ্যুত সরবরাহ না থাকার কারণে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস বা পড়াশোনা অব্যাহত রাখা একেবারেই অসম্ভব। তাই সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজে এই মূহুর্তে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস, ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত রাখার জন্য আপনার নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
একসঙ্গে করোনা মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী রাজস্ব থেকে বেতন পায় না এবং ঐসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা শিক্ষার্থীদের বেতনের উপর নির্ভরশীল সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ঘাটতি সরকারী তহবিল থেকে পূরণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
করোনার অর্থনৈতিক আঘাতে হয়তো অনেকের শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হতে পারে। এই পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে না হয় সেজন্য পারিবারিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগীতার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
তবে পরবর্তীতে করোনা মহামারী কিছুটা স্তিমিত হলে ভয়, শঙ্কা ও উদ্বেগকে পেছনে ঠেলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও সেশনজট সামাল দিয়ে একটি পরিকল্পিত সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর দিকে এগিয়ে যাওয়াটা সমীচীন হবে বলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনে করে। অবলম্বে উল্লেখিত দাবিগুলির প্রতি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করছি এবং অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের জন্য আহবান জানাচ্ছি।