ধামাইছড়া পরীচুগ বনবিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত

376

॥ ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ॥
রাামাটির সদর উপজেলার বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নের ধামাইছড়া পরীচুগ বনবিহারে ২য় বারের মত গৌতম বুদ্ধের প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রোববার শুরু হয়ে সোমবার বিকেলে দুইদিন ব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে বুদ্ধপুজা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, সুত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণ ও ফানুস বাত্তি উৎসর্গসহ নানাবিধ দান সম্পন্ন করা হয়।

সোমবার প্রথমে ধর্মীয় সভায় জগতের সকল প্রাণীর সুখ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বৌদ্ধরত্ন উপাধিপ্রাপ্ত ও বনভান্তের প্রধাণশিষ্য ভদন্ত শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির। পরে ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন ভক্তরা। সঙ্গীতশিল্পী রুবেল চাকমা ও পার্কি চাকমার উদ্বোধনী ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পঞ্চশীল পাঠ করেন গোবিন্দ চাকমা। বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন শীলা চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রসন্ন কুমার চাকমা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্লেন্টি চাকমা।

দুপুরে কল্পতরু ও কঠিন চীবরকে পুরো বিহার এলাকা প্রদক্ষিণ করে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। এতে অংশ নেন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো পুণ্যার্থী। পুণ্যার্থীদের পদচারণায় মূখর হয়ে উঠে বিহার প্রাঙ্গণ।

ধর্মীয় সভায় পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে ধর্ম দেশনা দেন, বৌদ্ধরত্ন উপাধিপ্রাপ্ত ও বনভান্তের প্রধাণশিষ্য ভদন্ত শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির। অন্যান্য ভিক্ষুদের মধ্য ধর্মদেশনা দেন, দীঘিনালা বনবিহার আবাসিক সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ শুভবর্ধণ মহাস্থবির, ধুতাঙ্গটিলা বনবিহার অধ্যক্ষ দেবধাম্মা মহাস্থবির, দীঘিনালা বনবিহার অধ্যক্ষ প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির, পরীচুগ বনবিহার অধক্ষ্য ভদন্ত শ্রদ্ধারত্ন স্থবিরসহ অন্যান্য প্রমূখ ভিক্ষু সংঘ।

ধর্ম দেশনায় বৌদ্ধরত্ন উপাধি প্রাপ্ত ও বনভান্তের প্রধাণশিষ্য ভদন্ত শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম হচ্ছে ফল বা নিজের ধ্যান। মূলত বৌদ্ধধর্মালম্বীরা যে সমস্ত দান, শীল, ভাবনা করেন তার একমাত্র কারণ হচ্ছে প্রজ্ঞা লাভের আশায়। যা প্রজ্ঞা এমন একটা জিনিস যার কোনো জন্মও নেই মৃত্যুও নেই।