নানা উপাচারে রাঙামাটিতে স্বরস্বতি পূজা উদযাপিত

408

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলিসহ নানা উপাচারে পূজা, আলোচনা এবং বিভিন্ন আঙ্গিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার রাঙামাটিসহ সারাদেশে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর পূজা উদযাপন করা হয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ও সংস্কৃতি মতে, বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী এ দিনটিতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দিনটিকে বলা হয় ‘বসন্ত পঞ্চমী’। জ্ঞান ও বিদ্যার দেবী সরস্বতীর জন্য হিন্দু ভক্ত, বিশেষ করে সম্প্রদায়টির শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরগুলোতে এ পূজার আয়োজন করে থাকে।

মঙ্গলবার দেবীর কৃপালাভের আশায় রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি সরকারী কলেজ সরকারী মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন মন্দির ও পাড়া মহল্লা ২৫ টি পূজামন্ডপ ও ঘরে ঘরে সাড়ম্বরে পূজার আয়োজন করা হয়।

প্রতিটি মন্ডপে মন্ডপে পূজার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও হাতে খড়ি, দেবীপদে বিদ্যার্থীদের অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, মন্ডপে দেবীর সামনে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা, সন্ধ্যার আরতি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকসজ্জা করা হয়েছে। আর পূজামন্ডপের বাণী অর্চণায় সমবেত হন নানা সাজে সজ্জিত নারী, পুরুষ, আবাল, বৃদ্ধ ও বনিতারা। আর ভক্তবৃন্দরা ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সরস্বতী দেবীর আরাধনা করা হয়। এছাড়া বিদ্যার এই দেবীকে স্মরণ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবের হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যা ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী। বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী। বীণাপাণি হিসেবে পরিচিত এই দেবীর বাহন শুভ্র রাজহংস। ধর্মীয় অনুসারে মাঘ মাসে শুক্লা পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পৃথিবীর মানব কুলে আসেন।

রাঙ্গামাটি পুরাতন কালী মন্দিরের পুরোহিত রণধীর চক্রবর্তী জানান, জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এ উৎসব সনাতনসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষ সমানভাবে এই উৎসব উপভোগ করছে। সনাতন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের শিক্ষার্থীরাও এই পূজা আয়োজনের মাধ্যমে বিদ্যাদেবীকে সন্তুষ্ট করে শিক্ষা অর্জনের পথ সুগম করতে ব্যস্ত। আর প্রতিবছর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মনোভাব নিয়ে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। এখানে সকল ধর্মের মানুষ একই সাথে সরস্বতী পূজার আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেই।

তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে পূজা মন্ডপে সন্ধ্যা আরতির অনুষ্ঠানমালা সীমিত আকারে করা হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভক্তবৃন্দদের পুজা মন্ডবে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

পূজা শেষে দেবীপদে বিদ্যার্থীদের অঞ্জলি দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ডপে দেবীর সামনে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হয় ‘হাতেখড়ি’ দিয়ে। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে রাঙামাটির বিভিন্ন পূজা মন্ডপে সন্ধ্যা আরতির অনুষ্ঠানমালা সীমিত করা হয়।