।। মাহাদী বিন সুলতান ।।
নানিয়ারচরে বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক সম্প্রসারণ ও সেতু নির্মান প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত নানিয়ারচর সেতুটি বদলে দিয়েছে এলাকাবাসীর ভাগ্য। স্থানীয়রা দেখছে সম্ভাবনাময় উন্নত আগামী। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে পুরো সেতু জুড়ে বিচরণ করছে অসংখ্য পর্যটক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঈদ পরবর্তি প্রতিদিনই পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক ভ্রমনার্থীদের বিচরণে আনন্দমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়ে উঠছে নানিয়ারচর সেতু জুড়ে। রাঙামাটি জেলা শহরসহ পাশ্ববর্তী জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও আশেপাশের জেলা থেকেও এসেছে প্রচুর দর্শনার্থী।
আগত পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী চেঙ্গী খালের উপর নির্মিত এই সেতুটির বিশালতা ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রূপ মন কাড়ে দর্শনার্থীদের। নদী পাড়ের ঘাসের উপর বসেই কাটিয়ে দেয়া যায় লম্বা সময়। রাঙামাটি থেকে আগত দর্শনার্থী নুর মোহাম্মদ হাছিব জানায়, রাঙামাটির সবকটি পর্যটন স্পট ঘুরেছি। কিন্তু পাহাড়ে এই বিশাল লম্বা সেতু সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
খাগড়াছড়ি থেকে আগত দর্শনার্থী মোঃ শাহিন আলম জানান, সৌন্দর্যময় নানিয়ারচর সেতুর কথা অনেক শুনেছি। আজ সখ করে বন্ধু-বান্ধবরা ঘুরতে এসেছি। যতটুকু শুনেছি, নানিয়ারচর সেতু তার চেয়েও বেশি সুন্দর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আষাড়ের বর্ষায় কানায় কানায় ভরে ওঠে নদী। ছাপিয়ে যায় নদীর ২কূল। তখন সেতুর সৌন্দর্য বেড়ে শতগুণ।
জানা যায়, ৬মাস থাকে নদী ভরা জল। বাকি ছ’মাস চেঙ্গী নদী হারায় নাব্যতা। তবে সারা বছরই থাকছে নবনির্মিত এই সেতুতে পর্যটকদের ভীড়। চলমান করোনা পরিস্থিতির ফলে লোক সমাগম একটু কম। তবে লকডাউন না থাকলে দর্শণার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যায় বর্তমানের চেয়ে ৩গুন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রিয়তোষ দত্ত জানায়, সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই সারা বছর বিশেষ দিনগুলোতে বাড়ছে দর্শণার্থীদের ভীড়। তবে উন্নত হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়ে দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শণার্থীরা।
নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানান, সেতুটি নির্মাণের পরে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে এ জনপদের সাধারণ জনগণের জীবনধারা। বাড়ছে ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত “গ্রাম হবে শহর” এটার বাস্তব রূপ যেন নানিয়ারচর সেতু।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলি রহমান তিন্নী বলেন, নানিয়ারচর সেতু এই উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। এই সেতু নির্মাণ ও সড়ক উন্নয়নে রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়িতেও আসবে আমূল পরিবর্তন। ব্যাবসা-বানিজ্যে, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং পর্যটন শিল্পেও ব্যপক উন্নয়নমুখী প্রভাব ফেলবে।