নানিয়ারচরে ৩টি ইউনিয়নে নেই নিজস্ব ভবন

362

॥ নানিয়ারচর প্রতিনিধি ॥

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির প্রত্যন্ত নানিয়ারচর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ৩টিতেই নেই পরিষদের নিজস্ব ভবন। এনিয়ে প্রায়শই ভোগান্তির স্বীকার হন সেবা নিতে আসা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। দূর দুরান্ত থেকে পায়ে হেটে সেবা নিতে আসা গ্রাহকগণ ১টা চেয়ারম্যান সনদপত্র নিতেও দাড়িয়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষ্যং, নানিয়ারচর, বুড়িঘাট ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যে শুধুমাত্র ২নং নানিয়ারচর ইউনিয়নেই রয়েছে পরিষদের নিজস্ব ভবন। এবিষয়ে জানতে চাইলে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলি রহমান তিন্নী জানান, পর্যায়ক্রমে প্রতিটা ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভবন হবে। সরকারের এই পক্রিয়া চলমান আছে। জায়গা নির্ধারণ সম্পন্ন হলে ভবণ নির্মাণ পক্রিয়া শুরু হবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সাবেক্ষ্যং, বুড়িঘাট ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান সনদপত্র, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন এমনকি ট্রেড লাইসেন্স করতে গিয়েও নানা রকম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ইউনিয়ন পরিষদের নিজস। ভবন না থাকায় ইডিসি (ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার) থেকেও পাওয়া যায়না প্রয়োজনীয় সেবা। পাওয়া যায়না গ্রাম পুলিশ বা বিট পুলিশিং সেবা। কৃষি বিষয়ক কোন সেবা ও মেলেনা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে।

এদিকে নানিয়ারচর বাজারে একটি অফিস ভাড়া নিয়ে অফিস পরিচালনা করছে বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়া উপজেলার বাঁকছড়িতে টিনের একটি ঘরে অফিস পরিচালনা করছে সাবেক্ষং ইউনিয়ন। সাবেক্ষং ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য রত্না চাকমা জানান, এক রুমে আমরা জনপ্রতিনিধিরাই ঠিকমত বসতে পারিনা। ইউনিয়নের নিজস্ব জায়গা থাকলেও নেই নিজস্ব ভবন। এতে করে জনসাধারণ যেমন ভোগান্তির স্বীকার হন, জনপ্রতিনিধিরাও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।

সাবেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য চিরনজীব চাকমা জানান, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভবন থাকলেও নানিয়ারচরে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় জনগণ এসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিজস্ব ভবন না থাকায় নিয়মিত সেবা সেবা দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ইউপি সদস্য পুলক চাকমা জানালেন, সপ্তাহ শেষে হাটের দিন পাহাড় ও ছড়া (খাল) পার হয়ে স্থানীয়রা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামাগ্রী কিনতে হাটে আসে। একই দিনে অনেকে চেয়ারম্যান অফিসে আসেন প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে। তখন তাড়াহুড়োর মধ্যে সেবা দেওয়ার বিষয়টা গোলমেলে হয়ে পড়ে।

এবিষয়ে ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অমল কান্তি চাকমা জানান, অনুমিত সাপেক্ষে আমরা ঘিলাছড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জায়গা ও অতিরিক্ত একটি ভবন ব্যবহার করে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার দরুন আজো নিজস্ব ভবন নির্মাণ সম্ভব হয়নি। তবে আমরা সাধ্যানুযায়ী জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানান, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের পক্রিয়া চলমান আছে। জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতায় নানিয়ারচরে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভবন করা হয়নি। এসমস্যা সমাধান হলে আশাকরছি দ্রুতই প্রতিটি ইউনিয়নে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।