॥ আলমগীর মানিক ॥
খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সরকারের মহাপরিকল্পনা রযেছে। রোববার (২৯আগষ্ট) দুপুরে জেলা মৎস্য অফিসের আয়োজনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এমপি দীপংকর বলেন, কাপ্তাই হ্রদ এ অঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। হ্রদটি থেকে যেমন বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে তেমনি মৎস্য সম্পদকে সমৃদ্ধ করছে। এছাড়াও গাছ-বাঁশ এবং যোগাযোগে হ্রদের ভূমিকা অনিস্বীকার্য।
“বেশি বেশি মাছ চাষ করি,বেকারত্ব দূর করি” এ প্রতিপাদ্যে এবার জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে। সপ্তাহ ঘিরে কাপ্তাই হ্রদে পোনামাছ অবমুক্ত করণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার (এমপি)। রোববার সকালে রাঙামাটি জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে আলোচনা সভার আগে মাছ অবতরণ ঘাটে এই পোনা অবমুক্ত করা হয়।
মাছের উৎপাদন বাড়াতে পাহাড়ি ঘোনায় ক্রিক পদ্ধতি মাছ চাষের ব্যাপকতা ছড়িয়ে আহ্বান জানিয়ে এমপি বলেন, অতীতে ক্রিকের যে কার্যক্রম নেয়া হয়েছিল তা সফলতার মুখ দেখেনি। আগামী দিনের প্রকল্পগুলো সঠিক বাস্তবায়ন করা গেলে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পাবে।
এমপি আরো বলেন, প্রজনন সময়ে কাপ্তাই হ্রদে মে-জুলাই তিন মাস মৎস্য শিকার বন্ধ থাকার সময় জেলেদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। যাতে করে মাছের বংশবৃদ্ধি হয় এবং জেলেরা বড় মাছ এবং বেশী করে মৎস্য আহরণ করতে পারে। আর সেই লক্ষে সরকার বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জেলেদের খাদ্যশস্যও প্রদান করে থাকে। কিন্তু প্রায় শোনা যায়, বেশীর ভাগ জেলে আইন না মেনে অনেকে নদীতে জাল ফেলে মা মাছ ধ্বংস করছে, যা মোটেই কাম্য নয়। এতে করে জেলেদেরই বেশী ক্ষতি হচ্ছে। পরবর্তীতে নদী থেকে মাছ কম আহরণ হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে তারাই দারিদ্রের শিকার হচ্ছে। তাই এশিয়ার বৃহত্তর কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধকালীন সময়ে মাছ শিকার না করার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের সকলকে হ্রদের রক্ষণাবেক্ষণে সচেতন হতে হবে। দূষণ এবং দখল থেকে হ্রদকে রক্ষা করতে হবে। এইজন্য সকলকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। এর আগে এমপি সকালে শহরের ফিসারী ঘাট এলাকায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ইং উপলক্ষে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
এসময় রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা উপমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহম্মেদ, আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ কামাল উদ্দিন, জেলা পরিষদ সদস্য ও মৎস্য বিষয়ক আহ্বায়ক মোঃ আব্দুর রহিম, জেলা মৎস্য অফিসের সিনিয়র সরকারী পরিচালক মিজানুর রহমান, রাঙামাটি বিএফডিসির ব্যবস্থাপক নৌ কমান্ডার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, ডেপুটি ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সিবিএ নেতা আলাউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন।
পোনামাছ অবমুক্তকরণের পর-পর নদী উপকেন্দ্র, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট মিলনায়ন কক্ষে এ বিষয়ে উপর সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে সফল মৎস্যচাষীদের পুরস্কার প্রদান ও সুফলভোগীদের মাঝে মৎস্য চাষের উপকরণ বিতরণকরা হয়।