॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আওতাধীন মহালছড়ি সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর দিদারুল ইসলাম, পিএসসি’র নেতৃত্বে শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ৩টার হতে শনিবার (১৬ অক্টোবর) পর্যন্ত সদর নুনছড়ি ইউনিয়নের দেবতা পুকুর নিকটে টহল চলাকালীন সময়ে আনুমানিক প্রায় ৩০০ বিঘা জমির গাঁজা ক্ষেত ধ্বংস করছে মহালছড়ি সেনা জোন। যা দূর্গম পাহাড়ে গাঁজার সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলো মাদক ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীতে পুলিশ স্থানীয় জনসাধারণ এর উপস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে গাঁজা ক্ষেত পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য দেড়’শ কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসময় গাঁজা চাষের সাথে যুক্ত ৭ জন এর মধ্যে জমির মালিক ১ জন তার নাম: কদু ত্রিপুরা (৪০), পিতা: মৃত কলারাম ত্রিপুরা, গ্রাম: দেবতাপুকুর পাড়া, পোসাট: ১নং খাগড়াছড়ি, থানা-জেলা: খাগড়াছড়ি।
গাঁজা চাষের সাথে যুক্ত ৩ জন তারা হলেন (১) মুক্ত কুমার ত্রিপুরা (৩০), পিতা: বিষ্ণু কুমার ত্রিপুরা। (২) সুদত্ত কুমার ত্রিপুরা (৩০), (৩) মঞ্জয় ত্রিপুর (৩৫), পিতা: চিনোত্ত দত্ত ত্রিপুরা। এরা সকালেই দেবতা পুকুর পারার বাসিন্দা।
গাঁজা চাষের কর্মীরা হলেন ৩ জন, তাদের নাম (১) মায়া কুমার ত্রিপুরা (২২), পিতা: মৃত মতি কুমার ত্রিপুরা, গ্রামঃ দেবতা পুকুর পাড়া, পোস্টঃ ১নং খাগড়াছড়ি। থানা/জেলাঃ খাগড়াছড়ি। (২) হেরন ত্রিপুরা (৪৫) এবং (৩) শান্তি ত্রিপুরা (২৫) এদের মধ্যে মায়া কুমার ত্রিপুরা (২২) কে নিরাপত্তা বাহিনী আটক করে।
নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য সূত্রে জানা যায়, গহীন অরণ্য ও দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় যেখানে জনবসতি তুলনামূলক কম। এরকম জায়গায় মাদক সন্ত্রাসীরা নিরাপদ এলাকা হিসাবে বেছে নিয়ে তারা এইসব গাঁজা ক্ষেত করে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা, অস্ত্র ক্রয় ও তাদের বেতন ভাতাসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এই এলাকায় জনসাধারণের চলাচল নেই বললেই চলে। কিন্তু সেনাবাহিনী কর্তৃক নজরদারীর ও শক্ত গোয়েন্দা কার্যক্রমের ফলে গাঁজা ক্ষেতের সন্ধান পায় মহালছড়ি জোন।
মহালছড়ি সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর দিদারুল ইসলাম, পিএসসি বলেন, লোক চক্ষুর আড়ালে যেখানে মানুষের চলাচল নেই সেইসব এলাকায় গ্রামের লোক জন গাঁজার চাষ করে। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, মহালছড়ি জোন সর্বদা সাধারণ মানুষের পাশে থেকে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। মহালছড়ি সেনা জোনের এইরূপ কার্যক্রম সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন প্রকার মাদকের চাষ বন্ধ এবং মাদক নিষ্কিয় করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। মহালছড়ি জোনের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মহালছড়ি জোনে এটি একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। ভবিষ্যতেও মহালছড়ি জোনের এরূপ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
করোনা মহামারীর মাঝেও মহালছড়ি জোন কর্তৃক বিশেষ অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রকার কার্যক্রম গ্রহণের ফলে সাধারণ মানুষের জোনের প্রতি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি দিন দিন আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি সাধিত হচ্ছে।
এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এস আই মো. আবুল কালাম আজাদ, এ এসআই মো. মিজান, মহালছড়ি থানার এস আই শেখ ইফতেখার মাহামুদ ও মো. ফরিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।