আলমগীর মানিক, ৩০ নভেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : সোমবার থেকে সারাদেশের পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি শহরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
সোমবার দুপুরে পাট উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে শহরের পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত রিজার্ভ বাজার এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিপুল কুমার। এসময় মোবাইল কোর্ট কর্তৃপক্ষ শহরের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে গিয়ে পরিদর্শনকালে ব্যবসায়িদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো পর্যন্ত প্লাষ্টিকের বস্তায় রাখা মালামাল দেখতে পান। এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট একজন দোকানদারকে প্লাষ্টিকের মোড়কে চাউল বিক্রি এবং মোবাইল কোর্টকে দেখে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করার অপরাধে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন।
প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার পরেও কেন আপনারা এসব নিষিদ্ধ মোড়ক বিক্রি করছেন আপনারা এই মোবাইল কোর্টের এ প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়িরা তাদের ভূল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এই ধরনের মালামাল বিক্রি করবেন না বলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারি ম্যাজিষ্ট্রেটকে অবহিত করেন। আর এজন্য ব্যবসায়িরা জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে অঙ্গীকারনামা প্রদান করে আগামী একমাস সময় প্রার্থনা করেন। পরে ব্যবসায়িদের অনুরোধে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অঙ্গীকার নামা নিয়ে আগামী একমাসের জন্য সময় নির্ধারন করে দেন। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে ব্যবসায়িদেরকে সম্পূর্নররূপে প্লাষ্টিকের মোড়ক পরিত্যাগ ও বিক্রি বন্ধ করতে অনুরোধ জানান। অন্যথায় ঠিক একমাস পরে পুনঃরায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে এবং সেই সময় এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য আর্থিক ও কারাদন্ড উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এসময় ব্যবসায়িরা পাটজাত মোড়ক বিক্রির জন্য রাঙামাটিতে একজন পরিবেশক নিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট্য পাট উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানান। ব্যবসায়িদের এই দাবিটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করে পাট উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারি পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল।
এসময় ব্যবসায়িদের উদ্দেশ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিপুল কুমার জানান, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এর ধারা ১৪ অনুযায়ী পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে মর্মে আইন জারি করা হয়েছে। এ অপরাধ পুনঃসংগঠিত হলে সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় উক্ত আইনটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও সাঁড়াশি অভিযান চালু হয়েছে। অভিযানে কারাদন্ড, অর্থদন্ড, ব্যাংক ঋণ সুবিধা বন্ধ, লাইসেন্স বাতিল, আইআরসি বা ইআরসি বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে।
এ অভিযানে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি পরিবহনে দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি রাঙামাটি শহর ও উপজেলা-থানা পর্যায়ে পরিচালিত হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান