॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
পাহাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে পুষ্টি সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনের পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ। তৃণমূল পর্যায়ে পুষ্টি নিয়ে কাজ করা লীন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ডিএনসিসি সদস্যদের নিয়ে এই কর্মশালা যৌথভাবে আয়োজন করে রাঙামাটি জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি (ডিএনসিসি) ও লিডারশীপ এনসিউর এডইকুয়েট নিউট্রিশন(লীন)। কর্মশালায় বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (বারটান) কর্মকর্তারা এই প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। ‘পুষ্টি পরোক্ষ কর্মসূচি বিষয়ক সতেজকরণ প্রশিক্ষণ’ শিরোনামের দু’দিনব্যাপি এই কর্মশালা বুধ ও বৃহস্পতিবার (২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালার উদ্বোধন করেন বারটানের নির্বহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ। বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বরুণ বিকাশ দত্ত, রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ডিডি, এলজিএসপি) মোঃ মামুন মিয়া ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নিতিশ চাকমা। লীন প্রকল্পের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা ডায়না চাকমার উপস্থাপনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লিডারশীপ এনসিউর এডইকুয়েট নিউট্রিশন প্রকল্পের পিডি জান্নাত নূর। দুইদিনের প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন বারটানের সিনিয়র অফিসার রাজু আহমেদ।
এছাড়া রাঙামাটি জেলার সিভিল ডাঃ বীপাশ খীসা, শিশু বিষয়ক চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল বাতেন, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালকসহ বারটানের অন্যান্য প্রশিক্ষকবৃন্দ বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। কর্মশালায় জানানো হয়, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান রেখেই সতর্কতার সাথে তাদের খ্যদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
পাহাড়ের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী এখনও পুষ্টিহীনতা ও রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে উল্লেখ করে বক্তাগণ বলেন, এই ঘাটতি মূল কারণ পুষ্টি বিষয়ে জনগণের মাঝে জানার স্বল্প ও সচেতনতার অভাব এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ না করা। এই ঘাটতি দূর করতে বিশেষ কোনো খাদ্যের প্রয়োজন নেই বরং ফলিত পুষ্টির ব্যবহার বা তাদের হাতে কাছে থাকা খাদ্য সামগ্রীর পরিকল্পিত ব্যবহার এবং আহারই যথেষ্ট। এ জন্য তাদেরকে জানাতে হবে তাদের নিজেদের উৎপাদিত কোন খাদ্য সামগ্রীগুলো কখন কিভাবে খেতে হবে এবং কত মাত্রায় খেতে হবে। দেশের মানুষের পুষ্টি বিষয়ক এই অসচেতনতা দূর করতেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুষ্টি সমন্বয় কমিটি কাজ করছে।
বিশেষ করে পাহাড়ের মানুষের পুষ্টি সচেতনতা অতীব জরুরী বলেই তিন পার্বত্য জেলা ১৮টি উপজেলায় বিশেষ কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে লীন প্রকল্প। বক্তাগণ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদেরকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুষ্টি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান এবং দুদিন ব্যাপি প্রশিক্ষণের সফলতা কামনা করেন।