চন্দ্রঘোনায় পুলিশের উপহারের ঘর পেলো সুইওয়ানু মারমা

451

অর্ণব মল্লিক

১৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয় মানসিক প্রতিবন্ধী সুইওয়ানু মারমা (৩৪) এবং গৃহহীন মংশৈসা মারমার (৩৯)। বিয়ের পর চন্দ্রঘোনা থানাদিন বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন এর নাইক্ষ্যংছড়ি আগাপাড়া এলাকায় ভূমিহীন এ দম্পতি বাঁশের বেড়া দিয়ে অন্যের জায়গায় কোনরকম ভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে। নিতান্ত গরীব এই পরিবারটি দুবেলা অন্ন জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। আর এই অবস্থার মধ্যে দিয়েও সংসার শুরু করে তারা। বৃষ্টির রাতে ঘরের চাল দিয়ে পানি ঢুকে ভিজিয়ে দিতো ঘরের সবকিছু। দুজনে সারা রাত কাটিয়েছে কত দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে। তবুও তারা স্বপ্ন দেখতে ভুলেনি, জীবনযুদ্ধে কখনো একে অপরকে ছেড়ে যায়নি। মাঝে মাঝে হয়তো ঝড়ে উড়ে গেছে তাদের স্বপ্নের ঘরের চাল বেড়া। তবুও তারা দমে যাননি। সুন্দর পরিপাটি ঘরের স্বপ্ন দেখেছেন। হয়তো তাদের বোবাকান্না সমাজের বিত্তবানদের কান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। এভাবে চলছিল জীবনসংগ্রাম। কৃষিকাজ ও দিনমজুরের কাজ করেই চলছিলো তাদের এ সংগ্রামী জীবন।

এদিকে তাদের এই সংগ্রামী জীবনের মধ্যে জন্ম নেয় দুইটি ছেলে। বড় ছেলে বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। তাদের জীবন সংগ্রাম চালাতে গিয়ে নিজেদের নতুন বাড়ির স্বপ্ন বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়ে। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপির মহৎ উদ্যোগে ও সার্বিক সহযোগিতায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ভুমিহীন সুইওয়ানু মারমা (৩৪) এবং মংশৈসা মারমা (৩৯) পেলো তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের নিজের নামে মাটি সহ পাকা ঘর, মাথাগোঁজার ঠাঁই।

তাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে তারা আবেগাপ্লুত। তাদের বলার ভাষা হারিয়ে শুধু উদ্যোক্তা সকলকে আশীর্বাদ ও শুভকামনা জানাচ্ছেন তারা। এখন এই নিরীহ পাহাড়ি জুম চাষী পরিবার সমাজের আর পাঁচটা পরিবারের মত একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ এর দিকে এগিয়ে যেতে পারবে নিঃসন্দেহে। গত ১০ এপ্রিল (রবিবার) চন্দ্রঘোনা থানার ওসি মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী ভূমিহীন এই পরিবারটিকে পুলিশের উপহারের স্বপ্নের গৃহটি হস্তান্তর করেছেন। তিনি মনে করেন, এটি বাংলাদেশ পুলিশের একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে ইতিহাস হয়ে থাকবে।