॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটিতে হলুদ তরমুজ চাষ করে আশাতীত সাফল্য পেয়েছে চাষীরা। ১২মাসি জাতের এই তরমুজ গ্রীষ্মকালে চাষ করা যায় বলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারে তারা, এতে আয়ও ভালো হয়। পার্বত্য রাঙামাটির আবহাওয়া ও মাটি এমনিতেই তরমুজ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পাহাড়ি মাটিতে ফলা তরমুজ অত্যন্ত মিষ্টি বলে দীর্ঘদিন ধরেই সারাদেশে এই জেলার তরমুজ সমাদৃত। তবে এখন অফ সিজনে হলুদ তরমুজ চাষের সম্ভাবনা দেখে তরমুজ চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা।
বরকল উপজেলার কুরকুটিছড়ি ইউনিয়নের চাষি কোরবান আলী জানালেন, ‘আমি লালতীর সীড লিঃ এর ‘ল্যানফ্যাই’ জাতের হলুদ তরমুজ চাষ করেছি। গ্রীষ্মকালীন তরমুজে যে এতো মিষ্টতা পাওয়া যাবে কল্পনাও করতে পারিনি। তরমুজের ফলন দেখে আমি নিজেই অভিভূত।
কৃষক কোরবান আলী জানান, তিনি ৬শতক জমিতে লাল তীরের ‘ল্যানফ্যাই’ জাতের হলুদ তরমুজ এর বীজ বপন করেন মে এর মাঝামাঝি। ৬০-৭০দিনের মাথায় তিনি ফল সংগ্রহ শুরু করতে পেরেছেন।
কোরবান আলী আশা করছেন উল্লেখিত জমি থেকে তিনি ৪ থেকে ৫ মেট্রিক টন তরমুজ সংগ্রহ করতে পারবেন। যার বাজার মূল্য দাঁড়াবে দেড় লক্ষ টাকার উপরে। ইতোমধ্যে কেজি হিসেবে বিক্রি করে তিনি হলুদ তরমুজ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করে ফেলেছেন। প্রতিটি তরমুজের ওজন এসেছে ৪ থেকে ৫ কেজি। কোরবান আলী জানালেন ৬ শতাংশ জমিতে ‘হলুদ তরমুজ’ চাষ করতে তার আনুমানিক খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকার কিছু বেশি।
নিজে সফলতা পেয়ে আরো কৃষককে এই চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তিনি লালতীর সীড কোম্পানীকে হলুদ তরমুজের একটি মাঠ দিবস আয়োজনের অনুরোধ করেন। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বরকলের কুরকুটিছড়িতে এই মাঠ দিবস পালন করা হয়। এলাকার চাষিরা আগ্রহের সাথে মাঠদিবসের আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, লালতীর কোম্পানীর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, এরিয়া ম্যানেজার রাজিবুল হক, টেরিটোরি ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম এবং পিডিএস অফিসার সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময় সীড কোম্পানীর কর্মকর্তারা কৃষকদের লালতীর কোম্পানীর বাজারজাতকৃত বীজ বিভিন্ন এর প্রজাতি; বিশেষত হলুদ তরমুজের গুনাগুন ও সাফল্যের সম্ভাবনা বিষয়ে বিস্তারিত ধারনা দেন।
প্রথমবার হলদ রমুজ চাষ করে সাফল্য পাওয়া উচ্চসিত চাষি কোরবান আলী জানান, রাঙামাটি জেলায় সাধারণত মূল তরমুজের মওসুমে হ্রদের পানি শুকিয়ে যায় বলে কৃষকেরা হ্রদের দুই তীরে তরমুজ চাষ করে থাকে। লাল তীরের হলুদ তরমুজের জাতটি যেহেতু মে মাসেই বপন করা যায় তাই হ্রদে পানি ভরাট হওয়ার আগেই এর ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। তাই অদূর ভবিষ্যতে রাঙামাটি জেলায় এই তরমুজ চাষ্যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
কৃষক কোরবান জানান- তার অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানতে ও তরমুজ প্রয়োজন হলে তার মোবাইল নাম্বার-০১৮১০৯৯৫৩৫৩।