লংগদুতে জেএসএস’র হাতে ইউপিডিএফ কর্মী শ্যামল চাকমা হত্যার অভিযোগ

276

আলমগীর মানিক

লংগদু উপজেলার কাট্টলী এলাকায় প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের গুলিতে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ এর সক্রিয় কর্মী শ্যামল চাকমা (৩৪) নিহত হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

ইউপিডিএফ এর মুখপাত্র অংগ্যা মারমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লংগদু কাট্টলী বিল এলাকায় অবস্থান করা ইউপিডিএফ কর্মী শ্যামল চাকমার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু নিশ্চিত করে। নিহত অংগ্যা মারমার বাড়ি রাঙামাটি নানিয়ারচর উপজেলাধীন সদর ইউনিয়নে।

এদিকে, লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল আমিন জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি শুনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে রয়েছি। লাশ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত হতাহতের বিষয়টি এখনো পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবো না।

এদিকে, বুধবার ভোর থেকেই ইউপিডিএফ বিরোধী জেএসএস এর কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের ফেসবুক পেইজে কাট্টলীতে রাতের অপারেশনে ইউপিডিএফ এর ৬ সন্ত্রাসীকে হত্যা ও ঘটনাস্থল থেকে দুইটি একে-৪৭ রাইফেল লুট করে নিজেদের কব্জায় নিয়েছে বলে ফেসবুকে অস্ত্রের ছবি ও তথ্যাদির প্রচার প্রচারনা চালালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সত্যতা মেলেনি।

এই ঘটনার জন্য সন্তু লারমার দল জেএসএসকে দায়ী করে ইউপিডিএফ নেতা অংগ্যা মারমা বলেছেন, এটা সম্পূর্নভাবেই রাজনৈতিক কিলিং মিশন। এই ধরনের সংঘাত বাঁধিয়ে পার্বত্য এলাকার মানুষকে জিম্মি করে রাখার পায়তারা চলছে। তিনি বলেন, পাহাড়ে ভাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে আমরা যখন পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের যাত্রার লক্ষ্যে সরকারকে একটি লিখিত প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। সেই থেকে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন একটি গোষ্ঠি আমাদের নেতাকর্র্মীদের হত্যার মিশনে নেমেছে। এটা থেকে প্রতিয়মান হয়যে সন্তু লারমা নিজেই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন চায়না। তিনি জানান, পাহাড়ে এই ধরনের হত্যাকান্ডগুলোর কোনো বিচার আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান নয় তাই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় আগ্রহী নই।

তবে এমন ঘটনার সাথে জেএসএস জড়িত নয় বলে দাবি করেছে জেএসএস এর একাধিক সূত্র। চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর লংগদু শাখার সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর চাকমা জানান, আমি স্থানীয়দের কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছি। নানিয়ারচর-লংগদু উপজেলা সীমান্তবর্তী দুর্গম হারিক্ষণ এলাকায় কিছু সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে ঐ এলাকাটি তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকা।

এব্যাপারে রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, আমরাও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে গুলিবিমিয়ের ঘটনা শুনেছি। তবে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা হতাহতের যে সংবাদগুলো শুনতে পাচ্ছি সেগুলোর সত্যতা এখনো খুঁজে পাইনি। যেহেতু এলাকাটি বেশ দুর্গম। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে এবং এলাকার পরিস্থিতি জানতে ওই এলাকায় রওনা করেছে।