কমিউনিটি পুলিশিং জনগণ ও পুলিশের মাঝে সেতু বন্ধন: নিখিল কুমার চাকমা

179

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন করা হয়েছে, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার কারণে আজ পুলিশ ও জনগনের মধ্যে দুরত্ব ঘুচে বন্ধুত্বের সেতু বন্ধন তৈরী হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে ঐক্যবদ্ধ সমাজ গড়তে এবং মাদক-জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বিকল্প নেই। অধুনা পুলিশ কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পুলিশের সকল সেবাসমূহকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের দূরত্ব কমিয়ে দিয়ে বন্ধুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশের সাথে জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পুলিশিংয়ের মূলমন্ত্র, শান্তি-শৃঙ্খলা সর্বত্র এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান নিখিল এসব কথা বলেন।

এর আগে জেলা পুলিশের উদ্যোগে রাঙামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শেষ হয়।

রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদের সভাপতিত্বে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়নে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তরিকুল ইসলাম, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান ও রোভার স্কাউটের সাবেক সভাপতি মোঃ নুরুল আবছার প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান।

পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ অতীতের চেয়ে বর্তমান সময়ে অনেকাংশে শক্তিশালী। তারা অতীতের চেয়ে বেশি কাজ করতে সক্ষম বলেই পুলিশের প্রতি বর্তমানে সাধারণ মানুষের আস্থা এসেছে। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরো বাড়াতে পুলিশ সদস্যরা বদ্ধপরিকর।

এসময় আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জনগণের দ্বার প্রান্তে সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষে কমিউনিটি পুলিশ ও বিট পুলিশিং সৃষ্টি। এতে করে পুলিশ ও জনগণের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি হয়েছে। সমাজ থেকে বাল্য বিবাহ, মাদক নির্মূল, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং অপরাধ, সাম্প্রাদায়িক সহিংসতা প্রতিটি স্তর থেকে অপরাধ নির্মূল করতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যদের তথ্য দিয়ে থানা পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং হচ্ছে অপরাধ সমস্যা সমাধানে পুলিশ ও জনগণের যৌথ অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার একটি নতুন পুলিশি দর্শন। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থায় কমিউনিটির সদস্যগণ, সমাজের বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ প্রতিরোধ ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত করা হচ্ছে। অপরাধের কারণগুলো দূর করা যেহেতু পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয় তাই এই কাজে অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কাজেই পুলিশকে ভয় না পেয়ে বন্ধু ভাবুন এবং সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান বক্তারা। আলোচনা সভা শেষে ২ জনকে জেলার শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সম্মাননা প্রদান করা হয়।