বাঘাইছড়ির আমতলী বিএনপির কমিটি অনুমোদনের ২৪ঘন্টার মধ্যেই ৫ নেতার পদত্যাগ

391

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি দিয়েছে উপজেলা বিএনপি। কমিটি ঘোষণার ২৪ঘন্টার মধ্যেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি এমন অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সহ নেতা।

ঘটনাসূত্রে জানা যায় গত ৩ ডিসেম্বর মো. সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুকে সভাপতি, কামাল হোসেনকে সিঃ সহ-সভাপতি, মো. হুমায়ুন কবির মজনুকে সাধারণ সম্পাদক, মো. জামাল হোসেনকে সিঃ যুগ্ম-সম্পাদক, মো. রফিকুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক, মো. সাইদুর রহমানকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মো. সোলাইমান মিয়াকে সিনিয়র সম্মানিত সদস্য করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ওমর আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাবেদুল আলম কমিটি অনুমোদন দেন। ঐদিন কমিটি অনুমোদনের পরপরই অনুমোদিত কমিটির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু, সিঃ সহ-সভাপতি কামাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান ও সিনিয়র সম্মানিত সদস্য মো. সোলাইমান মিয়া পদত্যাগ করেন।

তারা পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেন- ৩ডিসেম্বর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আমতলী ইউনিয়ন বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের মনোনীত ৭জন প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৭জনের মধ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠ ৫জনের মতামত বাদ দিয়ে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কমিটি অনুমোদন দেওয়ায় তারা পদত্যাগ করছেন।

পদত্যাগকারী সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন- উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলী দীর্ঘ ৪বছর যাবৎ এই কমিটি গঠন আটকে রেখেছে। তার একরোখা অবস্থানের কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করা সম্ভব হচ্ছিলোনা। ২০১৯ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর আমরা ১বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে উপজেলা নেতৃবৃন্দের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরও ওমর আলী তার পছন্দের মানুষ কমিটিতে না থাকায় সে অনুমোদন দেয়নি।

একপর্যায়ে জেলা বিএনপির হস্তক্ষেপে এলাকাভিত্তিক ভাগ করে তৃণমূলের ৭জন নেতাকে নিয়ে গত ৩ডিসেম্বর দলীয় কার্যালয়ে আলোচনায় বসা হয়। একটি নিয়মতান্ত্রিক কমিটি থাকার পর সম্মেলনের জন্য ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ওমর আলী অনুমোদন দেওয়ার পরও ৪বছর ধরে নিজের লোককে কমিটিতে আনতে ব্যর্থ হবে এমন ধারনা থেকে কমিটি গঠনে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচনের দাবীকে উপেক্ষা করে। নানা কুটকৌশলে জেলা বিএনপিকে ভুল বুঝিয়ে আমতলীকে ৩টি এলাকায় ভাগ করে ওমর আলী তার পছন্দের মানুষকে কমিটিতে আনায় আমরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি।

এছাড়াও ওমর আলী বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমতলী সহ সকল ইউনিয়নে নিজের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্য নানা ধরনের কুটকৌশল অবলম্বন করেছে বলেও অভিযোগ করেন পদত্যাগী নেতারা। এবিষয়ে তারা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম ও জেলা নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওমর আলী বলেন- এখানে আগে কোন কমিটি ছিলোনা। আমরা এলাকাভিত্তিক তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মতামত ও জেলা বিএনপির সাথে সমন্বয় করে কমিটি দিয়েছি।

কিন্তু জেলা বিএনপির কার্যালয়ে তৃণমূলের নির্বাচিত ৭জন প্রতিনিধিকে নিয়ে আলোচনায় কেন ৫জনের মতামত বাদ দিয়ে কেন কমিটি দেওয়া হলো এ প্রশ্নের সদুত্তর দেননি তিনি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল আলম বলেন- জেলা বিএনপি আমতলী ইউনিয়নকে ৩টি এলাকায় ভাগ করে কমিটি করে দিয়েছে আমরা তাদের নির্দেশ অনুযায়ী কমিটি অনুমোদন দিয়েছি। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ৫জন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পক্ষে মতামত দেন। বাকি ২জন সমন্বয় করে কমিটি গঠনের পক্ষে রায় দিয়েছিলো। আমি নিজেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী কিন্তু জেলা বিএনপি কেন এভাবে কমিটি করে দিয়েছে তা তিনি জানেন না।