॥ মোঃ ওমর ফারুক ॥
নানা প্রতিকুলতা মোকাবেলা করেও রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় পরিচালিত কাশখালী রশিদিয়া তালীমূল কুরআন একাডেমীর হেফজ ও এতিমখানার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে স্থানীয়রা। তবে সহসাই বাইরে থেকে সহযোগীতা না পেলে এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
কাউখালী উপজেলার কাশখালী এলাকার স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা এক বুক আশা নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলে। স্থানীয় ছেলে মেয়েদের মাঝে যুগোপযোগি ইসলামী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয় কাশখালী রশিদিয়া তালিমুল কুরআন একাডেমি হেফজ ও এতিমখানা।
বর্তমানে দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত আছে। এর মধ্যে ৬০ জন এতিম শিশু বিনা বেতনে থাকা খাওয়াসহ পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজি মোঃ সিরাজ উদ্দিন কাউসার বলেন, শত প্রতিক’লতা সত্ত্বেও আমরা এই দ্বীতি প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার সাথে জড়িতরা নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলেন, সরেজমিনে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় একটি জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে হিফজখানার শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। মাদ্রাসার নামাজের ঘরটিকে স্থানীয়রাও মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন, মসজিদটি অবস্থা বেশ সোচনীয়। একটু বৃষ্টিতেই পানি গড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের দান অনুদানে মাদ্রাসার একটি পাকা ভবনের কাজ শুরু হলেও অর্থাভাবে ২য় তলার ছাদ ঢালাই দিতে গিয়ে কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত।
মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা জানলো, ভবন না থাকায় আমাদের পড়শোনা করতে অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টির সময় আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয় বলে জানালো তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, সহসাই মাদ্রাসার হেফজখানা পরিচালনার জন্য একটি পাকা ভবন এবং মসজিদ পাকা করা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু স্থানীয়দের অনুদানের টাকায় এই বিনিয়োগ এখন প্রায় অসম্ভব।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহিম জানালেন, এলাকাবাসীর আন্তরিকতার অভাব নেই তবে এখনে বিত্তবানের সংখ্যা কম, তাই সমস্যা দিনদিন প্রকট হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং নেতৃবৃন্দ একটু সুদৃষ্টি না দিলে প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখা কষ্ট হবে।
সংশ্ল্ষ্টিরা জানালো প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে কর্মরত ১০ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের মাসিক সম্মানি চালিয়ে নিতেই হিমসিম খাচ্ছে কমিটি ভবনের কজ এগিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। তাদের মতে প্রতিষ্ঠানটি বাঁচিয়ে রাখতে জেলার উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে না এলে এই কাজগুলো হয়তো স্বপ্নই থেকে যাবে। তারা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম এবং এতিমদের ভরন পোষণ চালিয়ে নিতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়েছেন।