মণি সিংহের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ : নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির প্রতীক কমরেড মণি সিংহ

469

1-2

ঢাকা ব্যুরো অফিস, ৮ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি) :  শোষণমুক্তির সংগ্রাম, আদর্শের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা, সততা, সাহস, আত্মত্যাগ, মানবপ্রেম, গরীব-দুঃখী শোষিত-নির্যাতিত মেহনতি মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, গভীর দেশপ্রেম এর মূর্ত প্রতীক কমরেড মণি সিংহ বাংলাদেশের জনগণের সামনে চিরদিন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন। তিনি হচ্ছেন নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির প্রতীক।

ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামী, টংক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা, শ্রমিক-কৃষক মেহনতি মানুষের মুক্তি সংগ্রাম, সমাজতন্ত্রের মহান নেতা, সিপিবি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড মণি সিংহ-এর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ ৮ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেল ৩ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কমরেড মণি সিংহর স্মরণ অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ব্যক্তিবর্গ বক্তৃতা করেন।

স্মরণসভায় অধ্যাপক এম. এম. আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্টি সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক অজয় রায়, সোহরাব হাসান সাংবাদিক প্রথম আলো, ডা. দিবালোক সিংহ, আসলাম খান, লাকী আক্তার প্রমুখ।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বর্তমান রাজনীতিতে আদর্শহীনতা, দূর্বৃত্তায়ন, কালো টাকা, সন্ত্রাস, লুটেরাদের যে ধারা চলছেতা থেকে উত্তরণের জন্য কমরেড মণি সিংহ-এর বিপ্লবী জীবনার্দশ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কমরেড মণি সিংহ-এর ব্যক্তিগত গুণাবলী ও বিপ্লবী বৈশিষ্ট্য তরুণ প্রজন্মের জন্য এক চিরায়ত মূলবান শিক্ষা।

বক্তারা আরো বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে গিয়ে কমরেড মণি সিংহ অসংখ্যবার জীবনের ঝুকি নিয়ে জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগ করেছেন। কলকাতার মেটিয়া বুরুজে শ্রমিক আন্দোলন ও ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান হওয়ার পর থেকে বিশ বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি ছিল, অসংখ্যবার জেল খাটার পর ১৯৬৯ সালে সামরিক সরকার আবার গ্রেফতার করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বন্দিরা রাজশাহীর জেল ভেঙ্গে তাকে মুক্ত করেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন সাহায্য সহযোগিতা আদায়ে তার অবদান ছিল অবিসংবাদিত। তিনি ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। স্বাধীনতার পর কমরেড মনি সিংহ পূর্ণ গণতান্ত্রিক শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।

সভাপতির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ এম. এম. আকাশ বলেন, কথা ও কাজের সমন্বয়, সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন মনোভাব, কঠোর সময়নুবর্তিতা-নিয়মানুবর্তিতা ও মহৎ গুণাবলীর সমাহার মণি সিংহের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। অসামান্য মেধার পরিচয় দিয়ে তিনি জাতীয় মুক্তি আন্দোলন ও সর্বহারা শ্রেণীর মুক্তির আকাক্সক্ষাকে একসূত্রে গাঁথার চেষ্টা করেছেন। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী কবিতা, গান পরিবেশন করেন এবং কমরেড মণি সিংহ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান