বিলাইছড়িতে ম্যালেরিয়া নির্মূল এডভোকেসি সভা

151

॥ বিলাইছড়ি প্রতিনিধি ॥

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিলাইছড়িতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির আয়োজনে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি এডভোকেসি সভা ও ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সভায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উৎপলা চাকমা, মেডিকেল অফিসার আরিফুল ইসলাম ও ১নং বিলাইছড়ি ইউপির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান। তাছাড়া জনপ্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ঐতিহ্যবাহী নেতৃবৃন্দ ও গনমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির ম্যানেজার বিরো চাকমা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বিলাইছড়ি উপজেলায় ৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ফারুয়া এবং বড়তলী ইউনিয়নকে হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কারণ এই দুইটি ইউনিয়নে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। তিনি বলেন, ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণগুলো এখন আগের মত নেই, অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। তাই তিনি জ্বর হলে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। পৃথিবীর মধ্যে ৪ ধরনের ম্যালেরিয়া জীবানু আছে। প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাজমোডিয়াম ওভেল ও প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরিয়া। এর মধ্যে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম খুবই মারাত্বক । এটির কারণে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এবং এটি আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, ম্যালেরিয়া রোগটি মূলত ম্যালেরিয়া জীবানু বহনকারী কোন ব্যক্তিকে স্ত্রী এনোফিলিস মশা কামড় দিয়ে সেই মশাটি যদি অন্য কাউকে কারড় দিলে তার ম্যালেরিয়া হবে। এবং এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস হচ্ছে ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাবের সময়। তিনি আরও বলেন, কীটনাশক যুক্ত মশারী ব্যবহারের কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। যেমন- মশারী প্যাকেট থেকে খোলার পরে ছায়াযুক্ত স্থানে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা টাঙিয়ে রাখতে হবে। বছরে ৩-৪ বারের বেশি ধোয়া যাবেনা। এবং মশারীগুলো ময়লা হওয়ার পর ধুইলে সেই পানি যেখানে সেখানে ফেলা যাবেনা। কারণ সেই পানি হাঁস-মুরগী ও গরু-ছাগল খেলে মারা যেতে পারে। তাই গর্ত খুড়ে বা সেপটি ট্যাংকে ফেলে দিতে হবে।

এ সময় বক্তারা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ এবং ব্র্যাকর একার পক্ষে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা সম্ভব নয়। তার জন্য সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। এবং সরকার কর্তৃক ব্র্যাকের মাধ্যমে প্রদত্ত কীটনাশক যুক্ত মশারি ব্যবহারের নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে । তাই মশারী বিতরণের সময় সবাইকে একসাথে জড়ো করে আগে মশারী ব্যবহারের নিয়মগুলো জানাতে হবে। যাতে কারোর ক্ষতি নাহয়। তাছাড়া প্রদত্ত মশারীগুলো যাতে লোকজন যত্রতত্র গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহার না করে, ঘুমানোর সময় ব্যবহার করে তার জন্য সবাইকে সচেতন করতে হবে। এবং সভায় উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দকে যার যার অবস্থান থেকে ম্যালেরিয়া রোগের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্বি করার জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। যাতে করে সরকারের টার্গেট অনুযায়ী আমাদের দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল হয়।