রাঙামাটিতে ‘শিশুশ্রম নিরসনে সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক সেমিনার

104

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বড় ধরণের কোনো কল-কারখানা না থাকলেও নানা আঙ্গিকে প্রতিনিয়ত শিশুশ্রম বাড়ছে বলে মত দিয়েছে রাঙামাটির সুধী সমাজ। এ লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমে জড়িয়ে পড়া শিশুদের জন্য বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতি তথা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের বয়সভেদে মূল শিক্ষার ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনার বিকল্প পদ্ধতি সৃষ্টির উপর জোর দিয়েছেন রাঙামাটির সুধী সমাজ।

রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ে রোববার (১৮জুন) অনুষ্ঠিত ‘শিশুশ্রম নিরসনে সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই মতামত ব্যক্ত করেন বক্তারা। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলাপ্রশাসক বলেন, আমরা যারা সরকারি বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত আছি, তাদের অনেক দায় রয়েছে। আমাদের অবহেলার কারণে যদি একটি শিশুও তার প্রকৃত অধিকার তেকে বঞ্চিত হয় বা শিক্ষা জীবন ছেড়ে বেআইনীভাবে অপরিণত বয়সে শ্রমের সাথে জড়িয়ে পড়ে এ জন্য আমাদের বিবেকের কাছে দায়ী থাকতে হবে। শেষ বিচারের দিন এ জন্য আমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবো। কাজেই ইচ্ছা- অনিচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে শিশুশ্রমের সাথে জড়িয়ে পড়া আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে আমাদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও জেলাপ্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মারুফ আহমেদ এতে বিশষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর রাঙামাটি জেলার উপ-মহাপরিদর্শক মোঃ মোজাম্মেল হোসেন করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ ওমর ফারুক, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক ও চেম্বারের প্রতিনিধি হারুনুর রশিদ মাতব্বর।

সভায় সমাজ সেবার ডিডি রাঙামাটি শহরে শ্রমে জড়িয়ে পড়া ১৪ শিশুর একটি তালিকা উপস্থাপন করে জানান, আমরা গভিরভাবে তদন্ত করে দেখেছি এদের সবার বয়স ১৩/১৪ বছরের মধ্যে। কিন্তু তারা বা তাদের অভিভাবকরা এ বিষয়ে সহযোগীতা না করায় তাদের ফিরিয়ে আনার কাজটি বিলম্বিত হচ্ছে।

আলোচনায় উঠে আসে যে, রাঙামাটি শহরে, হোটেল-মোটেল ও চায়ের দোকানে, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে এবং ফার্নিচার কারখানায় বিশেষভাবে শিশু শ্রমিকরা কাজ করে থাকে। এর বাইরেও আরো কয়েকটি সেক্টরে শিশুরা কাজ করছে। তাদের শ্রম থেকে বিরত করে মূল শিক্ষার ধারাবাহিকতায় আনার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে বলে সভার আলোচনায় উঠে আসে।

সভায় জানানো হয়, শিশু শ্রম যে, একটি অপরাধ; শিশুকে শ্রমে জড়িত করা মালিক ও অভিভাবক উভয় যে আইনের দৃষ্টিতে দোষী এ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা নেই। তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিশুনীতির ব্যাপক প্রচার এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোট পরিচালনার বিষয়ে সেমিনারে গুরুত্বারোপ করা হয়।