॥ কাপ্তাই প্রতিনিধি ॥
কাপ্তাই হ্রদ এখন পানিতে টইটুম্বুর। থেমে থেমে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে। পানির পরিমাণ যতই বাড়ছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ বাঁধের উপরও চাপ ততই বাড়ছে, দেখা দিয়েছে শঙ্কা। পানি আরো কিছু বাড়লে বাঁধ রক্ষায় ছেড়ে দিতে হবে পানি, এমন তথ্য জানিয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বশীলরা।
কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে পাঁচফুট পানি বেশি রয়েছে, যা বাঁধের জন্য চরম হুমকি। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য বলছে রুলকার্ভ অনুযায়ী বছরের এই সময়টিতে কাপ্তাই হ্রদে পানি মওজুদ থাকার কথা ১০১.৩০ এমএসএল। কিন্তু সেই জায়গায় মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) কাপ্তাই হ্রদে পানির ছিল ১০৬.৯৭ এমএসএল বা মীন সি লেভেল। রুল কার্ভ অনুযায়ী বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা প্রয়োজনের তুলনায় ৫ ফুটের বেশি রয়েছে।
হ্রদে পানি পরিমান বেশি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৫ ফুটেরও বেশি পানি রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে। পানি আপাতত ছাড়া হচ্ছে না, জানিয়ে ম্যানেজার বলেন, আরও ১ ফুট পানি বাড়লে পানি ছাড়তে হতে পারে।
ম্যানেজার আরো জানান, তবে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি মওজুদ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পানির ¯্রােতে টারবাইন ঘুরিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট থেকে মোট ১৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি থাকায় বর্তমানে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটই সচল রয়েছে।
এর মধ্যে সোমবার ১ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৬ মেগাওয়াট, ২ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৫ মেগাওয়াট, ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ২৮মেগাওয়াট, ৪ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট এবং ৫ নম্বর ইউনিট থেকে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদে প্রয়োজনের তুলনায় পানি বেশি থাকলে যেমন বাঁধ হুমকিতে থাকে, তেমনি পানি ছেড়ে দিলে কর্ণফুলি নদীর দুইকূলে বসবাস করা জনপদগুলো বন্যার হুমকিতে থাকে। পানির ছাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় শঙ্কায় রয়েছে, চন্দ্রঘোনা, কোদালা ও রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দারা।