॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥
অবশেষে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শীর্ষ নেতারা পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মুখোমুখি সংলাপে বসতে রাজি হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে বান্দরবানের মেঘলা হলিডে ইন রিসোর্টে শান্তি প্রতিষ্ঠা বৈঠকে এই তথ্য জানানো হয়। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখ্যপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা।
তিনি বলেন, দসকালে বান্দরবানের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি নিজেদের (সদস্যেদের) মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল কিংবা পরশু রুমা উপজেলা সদরের মুনলাইপাড়া এলাকায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। তবে কেএনএফ প্রতিষ্ঠাতা নাথাং বম থাকবে কিনা সেই ব্যাপারে আমাদের জানা নাই। বৈঠকের তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’
মুখ্যপাত্র আরো বলেন, এই বৈঠকের কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের থাকাটা জরুরি। এই ব্যাপারে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ক্যশৈহ্লা সাথে যোগাযোগ করা জন্য আহ্বান জানান তিনি।’
শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কেএনএফের সঙ্গে ভালো একটি শান্তি আলোচনা হতে যাচ্ছে। পাহাড়ে কীভাবে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, সেদিকগুলো বৈঠকে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হবে।’
বৈঠকে কেএনএফের প্রধান নাথান বম ছাড়া শীর্ষ ৯ নেতা উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া বৈঠকে সরকারি ও আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকার কথাও রয়েছে।
এদিকে এই বৈঠকেই কেএনএফ মুখোমুখি সংলাপে বসতে রাজি হয়েছে বলে জানানো হয়। আত্মপ্রকাশের পর থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে পড়া কেএনএফের সিংহভাগ সদস্য বম সম্প্রদায়ের। বেশ কিছুদিন ধরেই তারা পাহাড়ে শান্তিকামী মানুষ, এমনকি যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করছেন তাদের ওপর হামলা, হত্যা, জিম্মি করে চাঁদা আদায় ও এমনকি ব্রিজ ভেঙ্গে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটায়। ইতোমধ্যেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কেএনএফের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে সংগঠনটির প্রধান নাথান বমসহ আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা বিদেশে আত্মগোপনে আছেন।
বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কমিটির আহ্বায়ক ক্য শৈ হ্লা সভাপতিত্বে সিংইয়ং ম্রো, সিঅং খুমি, কমিটির সদস্য সচিব ও বম সোশ্যাল কাউন্সিল সভাপতি লালজারলম বম, সাধারণ সম্পাদক লালথাংজেম বম, খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ও উপদেষ্টা পাকসিমবয়তলুং, ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিল সভাপতি রাংলাই ম্রো, বাংলাদেশ খুমি কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন উপদেষ্টা লেলুং খুমি, বাংলাদেশ মারমা অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মংচিংনু মারমা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুবকল্যাণ সংসদ সভাপতি রামবাদু ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগেও পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে কেএনএফ নেতাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। তবে এসব বৈঠকের সবই ছিল অনলাইনে। সেসব বৈঠকে কমিটির পক্ষ থেকে কেএনএফ নেতাদের মুখোমুখি আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়েছিল।