বর্ষীয়ান ভিক্ষু মহাসংঘরাজ তিলোকানন্দ মহাথের আর নেই

119

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

বাঘাইছড়ি উপজেলার স্বনামধন্য কাচালং শিশু সদনের অধ্যক্ষ, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের ৪র্থ মহাসংঘরাজ, সাদা মনের মানুষ উপাধিপ্রাপ্ত, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক অগ্রমহাপন্ডিত উপাধিপ্রাপ্ত, বহু প্রতিষ্ঠানের জনক, অসহায়দের অনাথ পিতা, মগবান শাক্য মনি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত তিলোকানন্দ মহাথের ভান্তে আর নেই।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ১১.৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসা নিয়ে সড়ক পথে নিজ বিহারে ফেরার পথে নিজ গাড়ীতেই মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে ভান্তের বয়স হয়েছিলো আনুমানিক ৮৬বছর। পূজনীয় ভান্তে দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, পূজনীয় ভান্তের মরদেহ বাঘাইছড়ি’র তাঁর নিজ বিহারে আনা হয়েছে এবং আপাততঃ মরদেহ সংরক্ষনসহ বিহার কমিটির পরবর্তী সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভিক্ষু সংঘ থেকে জানা গেছে, পূজনীয় ভান্তে দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসা শেষে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। ভান্তের চিকিৎসার জন্য এযাবৎ যারা কায়িক বাচনিক মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে এসেছেন তাদের নিকট পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা ও আশীর্বাদ জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রামে একজন কিংবদন্তি পূণ্যপুরুষের অন্তর্ধানে গোটা বৌদ্ধ সমাজে অপূরনীয় ক্ষতি সাধিত হলো পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের অসংখ্য অনুসারীরাও শোকাহত। আর পূন্যপুরুষের পূজনীয় ভান্তের মৃত্যুতে একটি বিরাট ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটলো।

উল্লেখ্য, শ্রীমৎ তিলোকানন্দ মহাথের ১৯৩৭ সালের ২৮ আগস্ট রাঙ্গামাটির শুভলং ইউনিয়নের বেতছড়ি গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। জীবদ্দশায় সমাজে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার দূরীকরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। পার্বত্য চট্টগ্রামে গরীব, অনাথ ও অসহায় শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষায় অনাথালয় ও বিহার প্রতিষ্ঠিত করে মানব সেবায় অবদান রাখায় ২০০৭ সালে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড ও এটিএন বাংলা কর্তৃক তিনি “সাদা মনের মানুষ” নির্বাচিত হয়ে স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। ২০১১ সালে তিনি ৪র্থ মহাসংঘরাজ পদে অভিষিক্ত হন।