॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
দল থেকে ছয়বার সংসদ নির্বাচনের এক বর্ণাঢ্য অভিজ্ঞতা, চারবারের এমপি, একবার প্রতিমন্ত্রী হওয়া, বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম প্রতিবাদকারী দীপংকর তালুকদারের দলীয় মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। এর পরও রাজনীতি বলে কথা, নানারকম গুঞ্জন ও নেতাকর্মীদের মাঝে একটু সন্দেহ তো ছিলই। তারপরও বেশিরভাগ নেতাকর্মীই ধরে নিয়েছিলেন আবারও দলীয় টিকিট নিয়েই ফিরবেন তাদের পেড় খাওয়া নেতা।
দল থেকে যখন একের পর এক মনোনয়ন ফরম কেনার খবর রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখনও মনোবল হারায়নি দীপংকরের সমর্থকেরা। নানাজন ফরম কিনলেও হিসাব নিকাশে ছিলেন দু’জনই। ২৪ তারিখে দীপংকর তালুকদার ঢাকা থেকে সবুজ সঙ্কেত নিয়ে যখন রাঙামাটি ফিরে আসেন। তখন সবাই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। দলীয় ফোরামে প্রস্তুতি সভাও শুরু হয়ে যায়। এরপরেই ফের ডাক আসে কেন্দ্র থেকে। চমকে গেলো সবাই; তবে নেতারা জানতে পারলেন দলীয় সভানেত্রী সকল মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সাথে কথা বলবেন। এটা বরং ভালোই; তবুও কিছু উদ্বেগ নিয়ে তাকিয়ে ছিল সবাই রোববার বিকাল ৪টার দিকে। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ; দলীয় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করছিলেন সারাদেশের ২৯৮ নেতার নাম; ঘেষাণা যেন শেষ হচ্ছিল না। সবশেষের আগের নামটা ছিল দীপংকর তালুকদারের। অমনি উল্লাসে ফেটে পড়লো দাদার হাজারো ভক্ত। নেত্রী হতাশ করেনি তাদের। অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করে আবার নৌকার টিকেট তুলে দিয়েছেন তার হাতে।
রাঙামাটি ২৯৯ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শহরের রিজার্ভ বাজারে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে দলের নেতাকর্মীরা।
রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ শুরু করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রিজার্ভ বাজার বাস স্টেশনের সামনে এসে কর্মসূচী শেষ হয়।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাওয়াল উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুকান্ত দাশ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজাহান, জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী বাপ্পা সহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ কর্তৃক রাঙামাটির বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর রোববার জেলার নেতাকর্মীরা আনন্দ উচ্ছাসে ফেটে পড়ে এবং সন্ধ্যায় বনরূপা হতে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শহরের বনরুপা থেকে আনন্দ মিছিলটি শুরু হয়ে কোর্ট বিল্ডিংসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে।
আনন্দ মিছিল শেষে বনরুপা আলিফ মার্কেট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শাওয়াল উদ্দিন, পৌর মেয়র মো: আকবর হোসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা আশীষ কুমার চাকমা নব, মো: আবু তৈয়ব ও ঝিনুক ত্রিপুরা, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: সোলায়মান চৌধুরী, জেলা যুবলীগ সাধারন সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, যুগ্ম সম্পাদক মনসুর আহম্মেদ মান্না ও সুজন বড়ুয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: জামাল উদ্দিন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন চৌধুরী ইকবাল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকাশ চাকমাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রোববার সন্ধ্যায় ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের উদ্যোগে ভেদভেদীর শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগারের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ শুরু করে আনসার ক্যাম্প ঘুরে ভেদভেদী বাজারে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুল হাই এর সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রফিকুল মাওলা, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক শাহ ফারুক পিন্টু ও সাধন মনি চাকমা, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সম্পাদক রিটন বড়–য়া, জেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল হক, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন সহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।