১ মে থেকে তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ-বিপণনে নিষেধাজ্ঞা

49

\ আনোয়ার আল হক \
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম হ্রদ হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির কাপ্তাই হ্র্রদে দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি ও অবমুক্ত করা মাছের পোনার স্বাভাবিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন মাসের জন্য সকল প্রকার মৎস্য সম্পদ আহরণ-বিপননে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পহেলা মে প্রথম প্রহর থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।
কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টির পর থেকেই প্রতিবছর কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে তিন মাস নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ বছর ১মে থেকে ৩১ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। রাঙামাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিবুল্লা মারুফ এই আদেশ জারি করেন।
নিঝেধাজ্ঞাকালীন সময়ে হ্রদে মাছ শিকার, পরিবহন ও হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। বন্ধকালীন সময়ে হ্রদে মাছ শিকার রোধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে স্থানীয় বরফ কলগুলো। এই তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা প্রায় ২৭ হাজার জেলে পরিবার সম্পূর্ন বেকার হয়ে পড়বে। তাদের জন্য অবশ্য সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে মাইকিং করে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে জেলেদের ও স্থানীয়দের সতর্কবাতা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আফনান জানান, গেল বছর বিএফডিসি মৎস্য অবতরণঘাটে প্রায় ৮ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ করেছে। এ থেকে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত বছর ৭ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ করেছিল। যা থেকে রাজস্ব এসেছিল ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ বছর হ্রদে ৫৬ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এরআগে গত ১৬ এপ্রিল হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভায় পহেলা মে থেকে তিন মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সিদ্ধান্ত নেয় কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটি। সভায় জানানো হয়, মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে কাপ্তাই হ্রদে অবৈধভাবে মাছ শিকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার পাশাপাশি নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে ২৭ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।