দুর্নীতির কারণে ওএসডি হওয়া বাতিল মাল আসছে রাঙামাটি মহিলা কলেজে

11

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
এবার রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজটি আরো নির্জীব করতে এই কলেজে পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে আরো একটি অচল মাল। ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নওফেলের বদলি বাণিজ্যের খলিফা খ্যাত জনৈক বেলাল রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজে পোস্টিং নেওয়ার পায়তারা করছেন। এমন খবর রাযামাটিতে ছড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকদের মাঝে যুগপৎভাবে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
আগস্ট বিপ্লবের পূর্ব পর্যন্ত তথা বিগত সরকারের সময় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এই শিক্ষক উপ-সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। কর্মকালীন সময়ে তার একটা কাজ ছিল বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের শিক্ষামন্ত্রীর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজী করা, এর বাইরে ছিল বদলি বাণিজ্যের রমরমা ব্যবসা। একাধিক কলেজ শিক্ষক ও বোর্ড সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, তিনি কলেজ শিক্ষকদের তাদের পছন্দের কলেজের পোস্টিং করিয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের অর্থ নিতেন, তারপর শিক্ষামন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্টতার সুবিধা ব্যবহার করে সুযোগমতো কাজটা করে দিতেন, এই প্রক্রিয়ায় তিনি বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন সেই সময়ে। জুলাই বিপ্লবের পর অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে পেরে কর্তৃপক্ষ তাকে প্রথম সুযোগেই পদচ্যুত করে; বর্তমানে তিনি ওএসডি অবস্থায় রয়েছেন।
কিন্তু মাত্র কয়েকমাস ও এসডি থাকলেও তিনি বসে থাকেননি, তার আগের ফাঁক ফোকর ঘাটাঘাটি করে আগের সেই দক্ষিণা পন্থায় নতুন পোস্টিংয়ের তদবির করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে কেউ একজন টোপ গিলে ফেলে।
খোঁজ খবর নিয়ে তিনি রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসার পরিকল্পনা করেন। বোর্ডে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই তিন জানতেন কোনো কারণে মহিলা কলেজে অধ্যক্ষের পদ খালি হলে, ভাপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার মত একটি পদ খালী আছে। তিনি সেই পদের জন্যই তদবির করে অনেকটা সফল হতে পেরেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, খবরটি সত্য। বেলাল নামের এই শিক্ষককে রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজে সহকারী অধ্যাপক (ইতিহাস) এর শূন্য পদে পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে।
শোনা যায় ইতোমধ্যে তিনি তার নিকটজনদের সাথে অনেকটা গর্বের সাথে বলে বেড়াচ্ছেন রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের আসনটি এখন অনেকটা তার পকেটে। কারণ তিনি জানেন খুব শীঘ্রই মহিলা কলেজের বর্তমানে কর্মরত অধ্যক্ষা বদলি হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বেলাল সাহেব সহকারি অধ্যাপকের পদটিতে বসতে পারলে, কিছুদিনের মধ্যেই অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার হাতছানি তাকে পুলকিত করে তুলছে।
অতিশয় দলবাজ এই শিক্ষক একই সাথে এবার মহিলা কলেজকে তার আদর্শের আওয়ামী করণের পরিকল্পনাও এঁটে ফেলেছেন। অথচ মহিলা কলেজে এতকাল কোনো রাজনীতি ছিল না। কিন্তু এই শিক্ষক কলেজে আসতে পারলে নির্ঘাৎ রাজনীতিতে মুখরিত হবে এই কলেজ।
রাঙামাটি অনেক অভিভাবক ফোন করে জানিয়েছেন, বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ও ফলাফল নিয়ে অভিভাবকেরা হতাশ। তারা মনেপ্রাণে কামনা করছিলেন এই কলেজে ২০১৪- ১৫ সালের মতো যোগ্য কোনো অধ্যক্ষ দায়িত্ব নিন। তাতে নিজীব কলেজটি আবার আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে।
অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সাথে সঙ্গতি রেখে আমরা চাচ্ছিলাম কি এখন শুনছি কি? আমরা আপামর ছাত্র জনতা এই দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শিক্ষক পরিষদের নেতাকে মহিলা কলেজে তথা রাঙ্গামাটির কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখতে চাই না।