লর্ড এরিক এইভবারির মৃত্যুতে সিএইচটি কমিশনের শোক

638

p....4-1

 

স্টাফ রিপোর্টার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি) : ব্রিটেনের প্রবীণ রাজনীতিক, অলপার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু লর্ড এরিক এইভবারির মৃত্যুতে গভির শোক প্রকাশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক (সিএইচটি) কমিশন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে সিএইচটি কমিশনের কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সিএইচটি কমিশনের কো-চেয়ার এডভোকেট সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় বলা হয়, লর্ড এরিক এইভাবারি বাংলাদেশের একজন প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে নানা ইস্যুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করে সেখানকার জনগণের পাশে দাঁড়ান। তিনি মানবাধিকার পরিপন্থী যে কোনো ইস্যুতে দৃঢ়তার সাথে বিরোধিতা করে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতেন এবং পাহাড়ে বিদ্যামান ইস্যুগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানে একজন দূত হিসেবে কাজ করেন।

শোকবার্তায় আরো বলা হয়, পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লর্ড এরিক যে ভূমিকা পালন করেন, তা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ চিরদিন স্মরণে রাখবে। কারণ পাহাড়ে যখনই কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তখনি তিনি সেখানে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলাপ আলোচনা করা ছাড়াও সিএইচটি কমিশনকে সব সময় মূল্যবান পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে গেছেন তিনি। সিএইচটি কমিশন মনে করে লর্ড এরিক এইভবারির এই শূণ্যস্থান কোনোদিন পুরণ হবার নয়।

শোকবার্তায় তাঁর স্ত্রী লিনডসে এইভবারিসহ তার সন্তান-সন্ততি, বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনসহ তাঁর শুভাকাঙ্খীদের প্রতি গভির সমবেদনা জানিয়ে বলা হয়, আমরা লর্ড এরিকের আদর্শ অনুসরণ করে তার রেখে যাওয়া কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাবো।

প্রসঙ্গত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে সাউথ লন্ডনস্থ নিজ বাসভবনে লর্ড এরিকের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের অবসান ঘটে। এসময় তার পাশে স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। গত এক বছর ধরে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যানসার রোগে ভুগছিলেন প্রবীণ এই ব্রিটিশ রাজনীতিক। স¤প্রতি কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পর চিকিৎসকরা তাকে কোনো আশা নেই বলে বাসায় ফেরৎ পাঠান।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একজন খ্যাতিমান মানবাধিকার নেতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন সদ্য প্রয়াত লর্ড এইভবারি। বাংলাদেশের প্রতি তার ছিলো আলাদা একটি টান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্রিটেনে ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করে গেছেন প্রবীণ এই নেতা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এই মানবাধিকার নেতা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কমিশনের জন্য অসামান্য অবদান রাখেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িকতার উত্থান, রাজনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি ঘটনা ব্যাপক পীড়া দিত প্রবীণ রাজনীতিক এইভবারিকে।

রাজনীতিকে পার্লামেন্ট কেন্দ্রিক করতে জাতীয় সমঝোতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রায় প্রতি বছরই লন্ডনে হাউস অফ লর্ডসে ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এইভবারি আয়োজন করতেন বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনার। এসব সেমিনারে সরকার ও বিরোধী দলীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা করতেন আজীবন গণতন্ত্রের পূজারী প্রবীণ এই রাজনীতিক।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান