স্টাফ রিপোর্টার, ৮ মার্চ ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশ মাতৃকার জন্য অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তৎকালিন রাঙামাটি মহকুমা প্রশাসক শহীদ এম আবদুল আলীকে এবছর (মরণোত্তর) স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনিত করা হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে দেশের ১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পদকের জন্য মনোনিত করা হয়। শহীদ এম আবদুল আলীকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনিত করায় তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত শহীদ আবদুল আলী একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজে তাৎক্ষণিক এক আলোচনাসভার পর শিক্ষার্থীদের মিষ্টিমুখ করানো হয়।
আলোচনাসভার প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন। বক্তব্য রাখেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মো. মুছা মাতব্বর, প্রধান শিক্ষক হাজী নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও শহীদ এম আবদুল আলী’র জীবনীগ্রন্থের লেখক ইয়াছিন রানা সোহেল।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে জেলাপ্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, এই প্রাপ্তি শুধু শহীদ আবদুল আলীর পরিবারের একার নয়। এটি তিন পার্বত্য জেলার জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়, এটি দেশের জন্য গৌরবের বিষয়। তিনি লেখক ইয়াছিন রানা সোহেলের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর লেখনির ফলেই এই মহান বীরের বীরত্ব সম্পর্কে সকলেই জানতে পারে। সরকারের দৃষ্টি গোছর করানোও সম্ভব হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে সকলেই চেষ্টা করেছে। অবশেষে সফলতাও এসেছে। এটা অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের বিষয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তফা জামান, এনডিসি মোঃ নাজমুল ইসলাম রাজু,শহীদ আবদুল আলী একাডেমির সাবেক প্রধান শিক্ষক সত্য নন্দী, কাজল কুমার সাহা, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. শাওয়াল উদ্দিন, মো. জামাল উদ্দিন প্রমূখ। পরিচালনা করেন স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ মুসলিম উদ্দিন।
উল্লেখ্য শহীদ এম আবদুল আলী মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে রাঙামাটির মহকুমা প্রশাসক ও প্রধান হাকিম ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সকলেই নিরাপদ স্থানে সরে গেলেও সেই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার জন্য এম আবদুল আলী সরে যাননি। ১৬এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ পাকিস্থানী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ১২দিন নির্মম নির্যাতনের পর তাঁর লাশ টুকরো টুকরো করে কাপ্তাই হ্রদে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল। গতবছরের ২৭এপ্রিল তাঁর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাংবাদিক ইয়াছিন রানা সোহেল প্রনীত ‘মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় বীর শহীদ এম আবদুল আলী’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর থেকেই প্রশাসনসহ সকলের দৃষ্টিতে আসে এই বীরের বীরত্ব। অবশেষে স্বাধীনতা সংগ্রামের ৪৫বছর পর তাঁকে স্বাধীনতা পদকে ভুষিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান




























