॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥ বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে ১২ মারমা নারীকে মায়ানমারে পাচারের অভিযোগে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে আটক করেছে পুলিশ। উসিরি ভিক্ষু (২৩) নামের এই ব্যক্তিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাপ্তাই উপজেলার মিতিঙ্গাছড়ি বৌদ্ধ মন্দির থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি থানায় মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করা হযেছে।
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২ মারমা যুবতীকে এই ভিক্ষু অনাথ আশ্রমে রাখার কথা বলে প্রথমে মিতিঙ্গাছড়ি বৌদ্ধ মন্দির পরে সেখান থেকে মায়ানমারে পাচার করে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন পাচার হওয়া মেয়েদের অভিভাবকরা। বান্দরবান সদর থানাায় শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত ঐ বৌদ্ধ ভিক্ষুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রফিক উল্লাহ্ ও রোয়াংছড়ি থানার এসআই গোলাম মোস্তফা জানান, রোয়াংছড়ির তারাছাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে ১৩ জন মারমা যুবতী মেয়েকে বিনা পয়সায় পড়ালেখা করানোর প্রলোভন দেখিয়ে কাপ্তাই এর মিতিঙ্গাছড়ি বৌদ্ধ মন্দিরে নিয়ে যায় বৌদ্ধ ভিক্ষু উসিরি ভান্তে। সেখান থেকে ১৫ /২০ দিন আগে ঐ মেয়েগুলোকে ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মায়ানমারে নিয়ে যায়।
এর পর থেকে মেয়েদের অভিভাবকরা নানা ভাবে যোগাযোগ করেও তাদের খোঁজ পায়নি। শুক্রবার সকালে রোয়াংছড়ি থানায় বাদী হয়ে একটি মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে নিখোজ মেয়েদের অভিভাবকরা। পরে সন্ধ্যায় কাপ্তাই পুলিশের সহায়তায় বান্দরবান পুলিশ মিতিঙ্গাছড়ি বৌদ্ধ মন্দির থেকে উসিরি ভান্তেকে আটক করে। গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঐ ভান্তেকে আটক করে। আটককৃত বৌদ্ধ ভিক্ষু উসিরি ভান্তে জানান মায়ানমারের মংন্ডু শহরতলীর কাছে নেজাদো মন্দিরে রোয়াংছড়ির ১১ জন মেয়েকে ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার হুয়াইক্ষ্যং দিয়ে ওপারে মেয়েদের পাঠান। তবে তিনি পাচার করেননি বলে জানিয়েছেন। মেয়েদের অভিভাকরা বিষয়টি জানেন বলেও তিনি জানান।
তবে যুবতী মেয়েদের কেন মায়ানমারে পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে আটককৃত বৌদ্ধ ভিক্ষু কোন উত্তর দিতে পারেননি। তিনি জানান এক দুদিনের মধ্যেই তারা বাংলাদেশে ফেরত আসবে। রোয়াংছড়ির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হ্লাথুরী মারমা জানান নিখোজ মেয়েদের অভিভাবকরা নিরুপায় হয়ে মানবপাচারের মামলা করেছে। একই সাথে ১২ জন মেয়ে নিখোজ হওয়া রহস্যজনক বলে তিনি জানান।