ঠেগায় পানীয় জলের অভাব মেটাতে উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগ

600

alamgir

॥ আলমগীর মানিক ॥ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী ঠেগারমুখ এলাকার কয়েকশত পরিবারের খাবার পানি দূর্ভোগ লাঘব করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।

উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর ঠেগামুখ এলাকার পরিবার গুলোর বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবস্থা নিশ্চিত হলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রিংওয়েল স্থাপনের মাধ্যমে পানীয় জলের দূর্ভোগ লাঘব করা হয়েছে।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে ঠেগামুখ বাসী ছড়া, ঝর্ণা সহ বিভিন্ন পানি উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করে দৈনন্দিন কাজ ও খাবার পানি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। এতে করে প্রতিটি সময় এই এলাকার মানুষদেরকে ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হতো।

এতো দীর্ঘ বছর আমরা খাবার পানির জন্য কতো জায়গা গিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা আমাদেরকে টিউবওয়েল বসিয়ে দিলেও তা দুই দিন পর নষ্ট হয়ে যেতো। এতে করে আমাদের পানির কষ্ট কখনোই লাঘব হয়নি। এতোদিন পর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আমাদের কষ্ট বুঝে আমাদের জন্য এতো বড় একটি প্রকল্প নিয়ে খাবার পানি ও ব্যবহারের পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমরা ঠেগামুখবাসী খুবই কৃতজ্ঞ।

এলাকার প্রবীন ব্যক্তিত্ব কামিনী চাকমা জানান, রাঙামাটি শহর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দুরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত বর্তী ঠেগামুখ বাজার ও আশপাশ এলাকার কয়েকশ পরিবার আজ অত্যন্ত খুশী। এই এলাকায় খাবার পানি সংকট দুর করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন চেস্টা চালিয়েছি কিন্তু কখনোই সফল হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আমাদের কষ্ট বুঝেছে।

তাই ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমাদের খাবার পানি সংকট দুরে এলাকার কয়েকশত পরিবারের জীবন বাচিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগেও আমরা ছড়া, ঝর্ণা ও হ্রদের পানির উপর নির্ভর ছিলাম। ছড়া, ঝর্ণা, পানি খাবার ফলে ডায়রিয়া ও পানি বাহিত রোগে অনেক লোক মারা গেছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাঙ্গামাটি নিয়ে যেতে যেতে রোগীরা মারা যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ বছর পর এই এলাকার মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে।
ঠেগামুখ বাজার ও আশ পাশের এলাকার জন্য স্থাপিত এই প্রকল্পের সুফল দেখতে গত ২৬ অক্টোবর এলাকা পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য প্রশাসন আশীষ কুমার বড়–য়া।

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী পল্লব চাকমা, বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সহকারী প্রকৌশলী পল্লব চাকমা জানান, দুর্গম এলাকায় এবং এলাকায় পাথর হওয়ায় দুটি রিংওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। ১০০ ফুট গভীর করে এই রিংওয়েল দুটিতে সারা বছর পানি থাকবে আশা করছি। এই প্রকল্পের আওতায় একটি শক্তিশালী জেনারেটরও দেয়া হয়েছে। এই জেনারেটারের মাধ্যমে এলাকায় যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে আলোকিত করা হচ্ছে। এতে এলাকাবাসীর পানীয় জলের অভাব পুরণ হলো এবং তারা আলোকিত ও হতে পারলো।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুল আলম জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড দুর্গম এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ঠেগামুখ এলাকার মানুষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সদস্য বর্গ এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় দুর্গম এলাকার মানুষের মুখে যে হাসি ফোটাতে পেরেছি এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।