পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভূমি সমস্যার সমাধান করতে হবে: মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক

800

dsc_0145

ঢাকা ব্যুরো অফিস- ২ ডিসেম্বর ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি: খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যা শুধু সেখানের বসবাস কারী বাঙালীদের সমস্যা নয়। এসমস্যা একটি জাতিগত সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের যেভাবে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে অনুরূপভাবে বাঙালিদেরকে সেই সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এদেশে কোন আদিবাসী নেই। তথা কথিত আদিবাসী নামে যারা পার্বত্য চট্রগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, তাদেরকে সরকারী ভাবেই মোকাবেলা করতে হবে। তিনি পার্বত্য চুক্তিকে এক পেশে চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি বিরোধ সম্পর্কে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী বাঙালিদের প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণ এবং সকল পর্যায়ে প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ভূমি বিরোধ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তির ১৯ বছর পূর্তি কালো দিবস উপলক্ষে ৫ বাঙালী সংগঠনের আয়োজিত রাজধানীর তোপখানা রোডের বাংলাদেশ শিশু কল্যান পরিষদ মিলনায়তনে এক সমাবেশে জে. ইব্রাহীম এ কথা বলেন। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলকাস আল মামুন ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন, মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক।

পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সাহাদাৎ ফরাজী সাকিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ৫ বাঙালী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলনের (একাংশের) মহাসচিব,মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির । বক্তাব্য রাখেন, পার্বত্য গন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট পারভেজ তালুকদার, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের মহাসচিব এডভোকেট এয়াকুব আলী চৌধুরী, জাগো পার্বত্য বাসীর কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ মোস্তফা, পার্বত্য গন পরিষদের মহাসচিব এডভোকেট আলম খান, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আহমেদ রাজু, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা মো:আবদুল হামিদ রানা, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতা ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইসমাইল নবী শাওন, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত)মো: আবদুল মজিদ, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম মনির, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো: সারোয়ার জাহান খান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য কালো চুক্তির ১৯তম বৎসর পরেও শান্তি আসেনি। জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এ চুক্তি সম্পাদন করে ছিলেন। সে দিন জাতীয় সংসদকে পাশ কাটিয়ে জনমনের তোয়াক্কা না করে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।

ঊক্তারা আরো বলেন, এ চুক্তি তিন পার্বত্য জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীকে ২য় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করেছে। এ চুক্তিকে পার্বত্যবাসীসহ সারাদেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে বাড়ি বাড়ি কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।যে চুক্তি আজও কোন শান্তি আনতে পারেনি। বক্তারা অবিলম্বে এ কালো চুক্তি বাতিলের দাবী জানান।

এদিকে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ এবং পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে কালো চুক্তি এবং বিতর্কিত ভূমি কমিশন আইন ২০১৬ বাতিলের দাবীতে শুক্রবার বিকাল ২.৩০ টায় পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ৫(পাচঁ)বাঙালী সংগঠনের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসময় বক্তারা কালো চুক্তি বাতিল করাসহ বিতর্কিত ভুমি কমিশন আইন বাতিল না করলে কমিশনকে কোন সময়ে কার্যকর করতে দেয়া হবেনা বলে হুশিয়ারী দেয়া হয়।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো অফিস।