স্টাফ রিপোর্ট- ৬ জানুয়ারী ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: আবারও পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সাজেক ইউনিয়নের মাচালং বাজার বয়কটের ডাক দিয়েছে সাজেকের আধিপত্যে থাকা আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএপ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সশস্ত্র এ সংগঠনটি মাচালং বাজার বয়কটের চাপ দিচ্ছে বলে জানা গেছে। নতুন করে বাজার বয়কটের ফলে গভীর পাহাড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মাচালং বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন। এ উপলক্ষে আগের দিন বৃহস্পতিবার মাচালং বাজারে সাজেকসহ দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে এবং হাটের দিনের মতো লোক সমাগম হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে ইউপিডিএপ সদস্যরা লোকজনকে বাজারে আসতে দিচ্ছে না, এমনকি গাড়িতে করে লোকজন আসতে চাইলে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাখা হচ্ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারে কোনো লোকজন দেখা যায় নি। সন্ত্রাসীদের ভয়ে এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে চাচ্ছেন না।
মাচালং বাজারের উপজাতি ও সাধারণ ব্যাবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এখাণকার ব্যবসায়ীরা সবাই একপ্রকার জিম্মী। তাদের স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই। সব সন্ত্রাসী সংগঠনকে চাঁদা দিয়েও তারা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারছেন না। কয়েক দিন পরপর একটা না একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। হঠাৎ করে কী জন্য এ বয়কট তারা বুঝতে পারছেন না। এখন তারা এ বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
অন্য মিডিয়া এ বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, তারা সকাল থেকে মাচালং বাজার বয়কটের বিষয়টি জেনেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে বাজারে আসতে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ বাধা দিচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে, তবে যেসব এলাকায় বাধা দেওয়া হচ্ছে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হচ্ছে।
জানাগেছে, মাচালং বাজারটি বয়কট করা হলে গভীর এ পার্বত্য অঞ্চলের জনগণকে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি সপ্তাহে এ বাজারে শত শত পাইকার আসেন বেচা কেনা করতে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কৃষিপন্য, প্রাণী সম্পদ, মাছ ও হাস-মুরগির ডিম বিক্রি করতে না পেরে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মূক্ষীন হতে হবে এ অঞ্চলের সাধারণ জনতাকে। তাছাড়া এ অঞ্চলে বহির বাজার থেকে আসা চাল-ডাল ও মুদি মনোহরি মালামাল বেচা কেনার বড় বাজার এটি। সব মিলিয়ে সপ্তাহে এ বাজারে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেচা কেনা হয়। তাই জনসার্থে বয়কট কালচার প্রতিহত করতে প্রশাসনের দ্রুত সুনজর প্রয়োজন।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহছান, ডাকা ব্যুরো প্রধান।