পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন, বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি বলেন, যারা শিশুদের শিক্ষা দিবে সেই শিক্ষদের নূন্যতম যাচাই বাচাই না করে দূর্নিতীর মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হলে তারা স্কুলে কি শেখাবে।
আমরা বিজ্ঞানের দিক দিয়ে এগিয়ে গেলেও আমাদের দেশের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন না হওয়ায় আমাদের সমাজে বৈষম্য, জাতিগত দ্বন্ধ, শ্রেণীভেদ লেগে থাকে। এ শিক্ষার ব্যবস্থার পরিবর্তন না করা পর্যন্ত আমাদের সমাজে হানাহানি লেগেই থাকবে।
শনিবার রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য সিন্তু লারমা এই মন্তব্য করেন। প্রধান অতিথি আরো বলেন, যে শিক্ষা আমাদের সমাজে হানাহানি, বৈষম্য দ্বন্দ্ব-সংঘাত দূর করতে পারে না সে শিক্ষাকে আমি শিক্ষা বলি না। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা গণমূখি হলেই শুধুমাত্র সমাজ থেকে দ্বন্দ্ব, সংঘাত দূর করা সম্ভব।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ও সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের আহবায়ক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নানের সভাপতিত্বে কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফারুক, জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল রিদওয়ানুল ইসলাম. রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমানের কন্যা শিক্ষাবিদ কাওসার জাহান ফরিদা, ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষীকা অঞ্জুলিকা খীসা ও নীরূপা দেওয়ান।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্যঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার কোন লিখিত দলিল নেই। এজন্য এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দলিল তৈরি করা উচিত। কারা এ পার্বত্যঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন তাদের সম্পর্কে জানতে হবে।
তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়ের ৫০বছর সুবর্ণ জয়ন্তি পালিত হচ্ছে। এ বিদ্যালয় থেকে অনেক কৃতি ছাত্রী বের হয়েছেন। তারা কি কোনদিন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষাসহ সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভেবেছেন? ভেবে দেখার জন্য এসময় তিনি বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রীদের দৃষ্টি কামনা করেন।
বক্তব্য পরবর্তী বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সাবেক ছাত্রীদের মধ্যে যারা দেশ-বিদেশে সুনাম ছড়াচ্ছেন এমন ৪৫জনকে সম্মাননা প্রদান করা হয় সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে।
রাঙামাটির ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ে শুক্রবার থেকে দু’দিন ব্যাপী শুরু হওয়া সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব বিকেলে সাবেক ছাত্রীদের স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান শুক্রবার বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে শুরু হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি দোয়েল চত্বর আনন্দ বিহার তবলছড়ি হয়ে স্কুলে গিয়ে শেষ হয়। এসময় স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রীরা নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।