নূর হোসেন মামুন- ২৩ জুন ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিনের বেলায় পাঠদানের মাধ্যমে সমগ্র এলাকায় ছড়ানো হচ্ছে জ্ঞানের আলো। আর সূর্য ডুবার সাথে সাথে বিদ্যালয়টিতে বসে মাদকের আসর। ফলে জ্ঞানের আলোর মতই বিদ্যালয়টি থেকে সন্ধ্যার পর থেকে মাদকের বিস্তার ঘটছে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবত করে আসছিল জনগণ। এবার অভিযানে তারই সত্যতা পাওয়া গেলো।
স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয়টিতে নিয়মিত মাদক বিক্রয় ও ইয়াবা সেবন করা হয়। কখনো মদ আবার কখনো গাঁজা। মৌঁমাছি যেভাবে মধু সংগ্রহ করতে ছুঁটে আসে মাদক সেবীরাও মাদক সেবনের জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে ভির জমায় ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটিতে। শুধু মাদক নয় গত ১বছর যাবত ব্যাপক অসামাজিক কাজে ব্যাবহƒত হয়ে আসছিল বিদ্যালয়টির দুটি কক্ষ। ক্রমান্নয়ে সংশ্লিষ্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে গড়ে উঠেছে পতিতালয়। কিন্তু কৌশলে এই কর্মকান্ডের তথ্য এতদিন গোপন ছিল।
শুক্রবার মধ্য রাতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ঘটনাস্থলে আটক হয়েছে উক্ত বিদ্যালয়টির নৈশ প্রহরী সফিকুল ইসলামকে (২৫)। ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমানে ইয়াবা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি, যৌন উত্তেজক ঔষধ এবং কনডম। পরে রাতেই তাকে ভ্রাম্যমান আদালতে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট রুহুল আমিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কাপ্তাই থানা অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ নূর।
ভ্রাম্যমান আদালত শেষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট রুহুল আমিন বলেন, প্রাক প্রাথমিকের শ্রেণীকক্ষে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি চলছিল। আরেকটি কক্ষ রাতে অসামাজিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। এসময় শ্রেণীকক্ষ থেকে কয়েকটি ইয়াবা, ইয়াবা সেবনের জিনিসপত্র, যৌন উত্তেজক ঔষধ এবং কনডম উদ্ধার করা হয়। শুরুতে স্কুলের নৈশ প্রহরী সফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়।পরে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। গতকাল সকালে (শুক্রবার) তাকে রাঙামাটি আদালতে প্রেরণ করা হয় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে সফিক জানিয়েছেন এক বছর ধরে তিনি ইয়াবা সেবন করছেন এবং রাতে অন্যান্য ইয়াবা সেবনকারীদের তিনি স্কুলে জায়গা করে দেন। স্কুল কমিটির সভাপতি তাকে এসব করতে বাধ্য করেন বলেও সফিক জানান। স্কুল ভবনে এসব অপকর্ম প্রধান শিক্ষকের অজান্তেই হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে সজিব বড়ুয়াকে বারবার ফোন করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।