রাঙামাটিতে কনকনে শীতে নাকাল জনজীবন বইছে হীম হাওয়া, বাড়ছে রুগী

207

॥ রাঙামাটি রিপোর্ট ॥

সূর্যটা আড়ালে লুকিয়ে থেকে থেকে উঁকি দিচ্ছে; বেশিরভাগ সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। গত দু সপ্তাহ ধরেই রাঙামাটিতে এমন অবস্থা চলছে। হীম বাতাসে আরও তীব্র হচ্ছে শীত। কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার তিনদিনই রাঙামাটিতে সর্বনি¤œ ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ্র থেকেই পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। মাঝে গত সপ্তাহের দিকে দেখা দেয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, পৌষের বৃষ্টিতে শীতের তীব্রতা বাড়লেও সকলের ধারণা ছিল বৃষ্টি চলে গেলে শীতের তীব্রতাও কমে যাবে। কিন্তু হয়নি এবার শুরু হয়েছে ঠান্ডা হাওয়া।

এদিকে শীতের তীব্রতায় রাঙামাটির হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেক রুগী; এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু। জেনারেল ও শিশু ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগীর কারণে দেখা দিয়েছে আসন সঙ্কট।

তবে আতঙ্কিত না হয়ে তা শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ িিদয়েছেন, রাঙামাটির সিভিল সার্জন। তিনি জানান, ঠান্ডা বাড়লে শিশুরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শিশুর মায়েরা সতর্ক থেকে যতœ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ভয়ের কিছু নেই।

রাঙামাটি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে একটু বেশী শীত পড়ার কারণে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে যারা শীতকে ভালোভাবে নিবারণ করতে পারে না, সে ধরনের পরিবারের শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময়ে অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে যায়। বাচ্চাদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস এর প্রবণতা বাড়তে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টের প্রদাহজনিত রোগগুলো বেড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শীত থেকে বয়স্ক ও শিশুদের বাঁচাতে পরিবারের সচেতনতার পাশাপশি গরম কাপড়ের ব্যবহারসহ শিশুদের বাড়তি যতœ নেওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

এদিকে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুরান কাপড়ের দোকনগুলোতে ভীড় জমাচ্ছেন নি¤œ আয়ের মানুষ বিশেষ করে গ্রামীণ নারীরা। শীতার্ত মানুষের জন্য উষ্ণতার ব্যবস্থা করতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সামাজিক সংগঠনগুলো। তাদের মতে এবার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্চাসেবী সংগঠনগুলো ব্যস্ত থাকায় রাঙামাটিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় শীতবস্ত্র বিতরণের হার একেবারেই নেই বললেই চলে। এখন নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ায় দরদি মানুষের সচেতন হবার সময় হয়েছে বলে মনে করছেন সূধীজনেরা।