রাঙামাটি শহরে নির্মাণাধীন ভবনে বিদ্যুতায়িত হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু

354

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

দূর্ঘটনা প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই রাঙামাটি শহরে নির্মাণাধীন ছয়তলা ভবনে কাজ করার সময় ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত শ্রমিকের নাম মোঃ কামরুজ্জামান (৩২)। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলাধীন ফুলবাড়ি থানার ভাঙ্গামোড় গ্রামে। সে চার সন্তানের জনক বলে জানিয়েছে তার সহকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সংলগ্ন নির্মাণাধীন এই ভবনে কাজ করার সময় শ্রমিকের মৃত্যু হয়। নিহতের লাশ হাসপাতালে নিয়ে সেটি পোষ্টমটেম ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গোসল ও কাপন পরিয়ে নিহতের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায় নির্মাণ কাজ পরিচালনকারীরা। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এসময় কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে প্রাথমিকভাবে আটক করে নিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ। আটককৃতরা হলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উপ-ঠিকাদার মোঃ শাহজাহান (৬০) ও ভবন মালিকের শ্যালক মোঃ জসিম।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সেখানকার নির্মাণ শ্রমিকরা জানায়, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের পাশেই নির্মানাধীন এই ছয়তলা ভবনটির মালিক কুয়েত জনৈক প্রবাসী ব্যক্তি। তার অর্থায়নে শ্যালক জসিমের পরিচালনায় চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিস্থ ক্যান্টমেন্ট এলাকার বাসিন্দা হাজী আবু তাহের এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভবনটির নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিলো। দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো প্রকার প্রস্তুতি ছাড়াই প্রধান সড়কের পাশে এবং বিদ্যুতের ৩৩ হাজার কেভির সংযোগ লাইনের ধার ঘেষে নির্মাাণ করা হচ্ছে ভবনটি।

বৃহস্পতিবার সকালে অন্যান্য দিনের ন্যায় কাজ করার সময় একটি রড পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ৩৩ হাজার কেভির বিদ্যুতের তারে লাগলে সেটি কামরুজ্জামানের হাতে থাকায় সহজেই বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পড়ে যায়। এসময় সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এসময় নিহতকে কৌশলে হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে বিল্ডিংয়ের প্রবেশ পথ বন্ধ করে ভেতরে নিহতের লাশ গোসল করিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় ঠিকাদারের লোকজন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে তথ্যটি সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল জানায়, এই ভবনটি নির্মানের সময় পাশ্বোর্ক্ত প্রতিবেশিদের অনেকের ঘরেও বেশ কয়েকবার ইট ও লোহার রড ভেঙ্গে পড়ে ঘরের চালও ছিদ্র হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও মালিকপক্ষ কোনো সুরক্ষা মূলক ব্যবস্থা নেয়নি।

বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদার হাজ্বী মোঃ আবু তাহের মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, আমি বারংবার মালিকপক্ষ থেকে জানিয়েছিলাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে কিন্তু তারা নেয়নি। আমার কি করার আছে।