অগ্নি দুর্ঘটনাপ্রবণ রাঙামাটি জেলার সাত উপজেলাতেই নেই কোনো ফায়ার স্টেশন

330

॥ এম নাজিম উদ্দিন ॥

অগ্নি দুর্ঘটনাপ্রবণ রাঙামাটি জেলার সাত উপজেলাতেই নেই কোনো ফায়ার স্টেশন। অথচ প্রতি বছরই এ জেলায় কমপক্ষে অর্ধশত অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। জেলা সদরের সাথে উপজেলাগুলোর যোগাযোগ দুর্গমতার কারণে অনেক সময় আগুন লাগলে জেলার ফায়ার সার্ভিস তেমন কিছুই করতে পারে না; তাদের নদী নির্ভর বাহন একেবারেই সীমিত। দীর্ঘ দিনের দাবি সত্ত্বেও এখন এখনও গড়ে উঠেনি রিভারইন ফায়ার স্টেশন; অথচ পাঁচটি উপজেলার সাথে মূল যোগাযোগ মাধ্যম নদীপথ। খোদ জেলা সদরেরও অনেক এলাকায় আগুন লাগলে নদীপথের প্রয়োজনীয়তা বারবার দৃশ্যমান হয়।

বৃহত্তর এ জেলায় সদর উপজেলাসহ কাপ্তাই ও কাউখলী উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু থাকলেও বাকি সাত উপজেলায় নেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। ফলে উপজেলাগুলোতে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকা-ে,প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে হাজারো পরিবার ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

রাঙামাটি সদর জেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলা,কাপ্তাই ও কাউখালী উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু রয়েছে। লংগদু ও রাজস্থলী উপজেলায় ভবন নির্মাণের কাজ সমাপ্তির পথে। বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্য এরমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বরকল,বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শেষ হয়নি।

রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র সহকারী পরিচালক রতন কুমার নাথ জানান,রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ১০টি উপজেলা রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে রাঙামাটি সদর,কাপ্তাই ও কাউখালী উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া লংগদু ও রাজস্থলী দুই উপজেলায় ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। আশা করা যাচ্ছে,এই অর্থবছরে যদি ভবন হসস্তান্তর করা হয় তাহলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কার্যক্রম চালু করা যাবে।

বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্য এরমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একনেকে প্রকল্প পাশ করা হলেই কাজ শুরু করা হবে। তবে বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শেষ হয়নি। কিন্তু প্রকল্প চালু আছে। প্রকল্পগুলো যদি পুনরায় পাশ করা হয় তাহলে উপজেলাগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও কার্যক্রম চালু করা হবে।

তিনি আরো জানান,পার্বত্য চট্টগ্রামের সড়ক পথ বা নৌপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই দুর্গম। একটি উপজেলা থেকে আরেকটি উপজেলায় সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছানো খুবই কষ্টসাধ্য। এখানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা কাজ করে তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নেই, লোকবল নেই, এমন উপজেলায় যদি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে তবে অন্য উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাড়ি করে তাদের যন্ত্রপাতি নিয়ে দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা তাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বিশেষত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই অগ্নিকান্ড ব্যাপকতা লাভ করে। ধন-সম্পদ যা নষ্ট হওয়ার নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।