অযোগ্য লোকেরা সাংবাদিকতায় ভর করলে এই মহান পেশা কলুষিত হবে

276

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
অপসাংবাদিকতা বন্ধে শীঘ্রই জেলাভিত্তিক ডাটাবেজ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। রাঙামাটিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদানকালে চেয়ারম্যান বলেন, সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ, গণমাধ্যম আছে বলেই মানুষ তথ্য জানতে পারে; ভালো কাজের প্রসংশা হয় এবং অসঙ্গতিপূর্ণ তৎপরতা মানুষের সামনে প্রকাশ পায়।

কিন্তু সাংবাদিকদের মনে রাখতে হবে জাতিসত্তা বিনাশী এবং দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও সংবিধান বিরোধী বা পরিপন্থী কোন সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না। পাশাপাশি এ জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অর্জনকে সমুন্নত রাখা এবং এর বিরুদ্ধে প্রচারণা থেকে অবশ্যই সংবাদিকদের বিরত থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণের উপর প্রভাব ফেলে এমন বিষয় জনগণকে অবহিত রাখা একজন সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব। তবে যে কারো ধর্মীয় চেতনা, ব্যক্তিগত অধিকার ও সংবেদনশীলতার প্রতি পূর্ণ সম্মানবোধ রেখেই সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।

তিন পার্বত্য জেলায় ধারাবাহিক সফরের অংশ হিসেবে রোববার (১ নভেম্বর) সকালে রাঙামাটি সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চেয়ারম্যান বলেন, গণমাধ্যম বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে। এর মূল কারণ হলো পেশাদারিত্বের অভাব। অযোগ্য লোকেরা এ পেশায় ভর করলে মহান পেশাটা কলুষিত হবে। সে জন্য আমাদের কিছু নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। করোনাকালে সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রণোদনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিচারপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। করোনাকালে সারাবিশ্বের গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা যেখানে করুণ জীবনকাল পার করেছেন সেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের নগদ অর্থের প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করেছেন; যা বিশ্বে বিরল।

জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে রোববার রাঙামাটি সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে “মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার” শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা ও বই বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, সাংবাদিকতা মহান পেশা, সন্মানের পেশা। এ পেশার মান বজায় রাখতে এবং পেশার ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আগামী ২০৩০সালের মধ্যে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ যাবতীয় সমস্যা দূর করতে হবে। তরুণ সাংবাদিকদের মন দিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করার তাগিদ দিয়ে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, সাংবাদিকতার মূল প্রাণ হলো অনুসন্ধানী রিপোর্ট। এ ধরণের রিপোর্ট করলে যেমন সমাজের অসামঞ্জস্যগুলো উঠে আসবে তেমনি পরিবর্তনের প্রত্যয় ঘটবে।

চেয়ারম্যান আরও জানান, গণমাধ্যম বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে। এর মূল কারণ হলো- পেশাদারিত্বের অভাব। অযোগ্য লোকেরা এ পেশায় ভর করলে মহান পেশাটা কলুষিত হবে। সেইজন্য আমাদের কিছু নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে।

এসময় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এর সচিব (যুগ্ম সচিব) শাহ আলম, রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহ, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি মোঃ বোরহান উদ্দিন মিঠু, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, প্রবীণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে ও মোহাম্মদ আলী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হকসহ রাঙামাটিতে কর্মরত সংবাদ কর্মীরা আলোচনায় অংশ নেন।