॥ স্টাফ রিপোর্টর ॥
আজ আল্লাহর আউলিয়া শাহ সুফি হযরত ধনা মিয়া ফকির (রহ:) ওফাত দিবস। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে এ দিনে যুদ্ধকালীন সময়ে “জয় বাংলা ও স্বাধীন বাংলাদেশ স্লোগান দেওয়াতে বর্বর পাকিস্তানী দোসররা এ সুফি সাধক-কে গুলি করে হত্যা করে।
স্থানীয় লোক মুখে শোনা যায় আধ্যাত্বিক ক্ষমতার অধিকারী শাহছুফি ধনা মিয়া (রহ:) (ফকির মামা) অলৌকিক একজন সুফি সাধক। জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই তাঁর মাজারে আসে প্রশান্তির ছায়াতলে আশ্রয় পাওয়ার আশায়।
রাঙামাটির অদূরে বরকল উপজেলার সুবলং বাজারের পাশে কাপ্তাই হ্রদ ঘেষে জেগে উঠা দ্বীপে গড়ে উঠেছে এ মাজার শরীফ। প্রতি বছর তাঁর ওফাত দিবসে জাতি,বর্ণ,ধর্ম,গোত্র নির্বিশেষে হাজার ভক্তকুলের সমাবেশ ঘটে এ মাজার শরীফে।
এ বছর তাঁর ওফাত দিবসে মাজার জিয়ারত করতে আসা কয়েকজন পূর্ণাথীর সাথে কথা বললে তারা জানান, ধনা মিয়া ফকির মামা (রঃ) এর মাজার জিয়ারত করতে আমাদের খুবই ভালো লাগে, প্রশান্তির জন্য আমরা দান করি। ভক্তরা আরো জানান, আল্লাহর ওলি মানে আল্লাহর বন্ধু। আর আল্লাহর বন্ধুর দরবারে আসলে কার না ভাল লাগে। তাই এ ওলির ওফাত দিবসে প্রতি বছর আসার চেষ্টা করি।
এদিকে ধন মিয়া ফকির (রহ:) খাদেম মোঃ আতর আলী ধনা মিয়া ফকিরের সম্প্রতি একটি অলোৗকিক ঘটনা সম্পের্কে জানান। তিনি বলেন, একদিন এক জেলে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার করছিলো। হঠাৎ এক উপজাতি সন্ত্রাসী নৌকা,জালসহ তাকে অপহরণ করে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় বাঁচার জন্য এ জেলে ধনা মিয়া ফকির (রহ:) উছিলায় আল্লাহর নাম স্মরণ করেলেন। তখনি আকস্মিক এক মহিলা কন্ঠে একজন এসে জিজ্ঞাসা করলেন আপনার কি হয়েছে? তখন জেলে তার ঘটনা খুলে বললেন, পরে সেখান থেকে অপহরণকারী নিজেই জেলেকে মুক্তি দেয়। তিনি আরো জানান,-সৃষ্টিকর্তার কাছে কোন জাতি ভেদাভেদ নেই। এখানে সব জাতি ধর্ম নির্বিশেষের মানুষ প্রতিনিয়ত মামার দরবার শরীফে আসে।
ধনা মিয়া ফকির (রহ:) মৃত্যুবরণের সংক্ষিপ্ত ঘটনা:
ধনা মিয়া ফকির ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় “জয় বাংলা আর দেশ স্বাধীন” এ শ্লোগান দেয়ার অপরাধে তাঁকে হানাদার ও রাজাকাররা নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তী তাকে ঘটনাস্থলের কাছে বরকল উপজেলার সুবলং বাজারে পাশে জলবেষ্টিত একটি দ্বীপে সমাহিত করা হয় । তাঁর পবিত্র মাজার শরীফের প্রসিদ্ধি উপজেলার গন্ডি ছাড়িয়ে এখন জেলার মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ঘাতকের হাতে নিহত এই সাধক তাই ধনা মিয়া ফকিরের নামেও সকলের কাছে সুপরিচিতি রয়েছে।
মাজার কমিটির সভাপতি মোঃ আবুল হাসেম মাষ্টার জানান, – ’’আমরা প্রতি বছর ন্যায় এ বছরও আড়ম্বর নানা আয়োজনে এ সাধকের ওরশ শরীফ পালন করবো। তিনি বলেন,গত বছরের তুলনায় এবছর আড়ম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে এ সাধকের ওফাত দিবস পালন করা হবে। মাজার পরিচালনা কমিটির এ খাদেম জানান,ওরশে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়েছি। যাতে কোন ধরনের বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।