আলোচিত সেই সিসিডিআর জাহিদের ৭বছর কারাদন্ড ১৫লাখ টাকা জরিমানা

609

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
অবশেষে সাজা পাচ্ছে লাখো মানুষের চোখের জলের কারণ হওয়া সিসিডিআর জাহিদ। আদালতের রায়ের কারণে এখন সে স্বীকৃত প্রতারক হিসেবে পরিচিতি পেলো। রাঙামাটির বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ে প্রতারক জাহিদের ৭ বছর কারাদন্ড ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা আদেশ প্রদান করা হয়েছে। টাকা অনদায়ে আরো এক বছর কারাদন্ড ভোগ করতে হবে তাকে।

২০১৭ সালে রাঙামাটির কোতয়ালী থানায়  দায়ের করা একটি প্রতারণা মামলার রায়ে এই আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। জি আর মমলা নং-৩৫১/১৭। দীর্ঘ শুনানী শেষে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান এর আদালত এই দন্ডাদেশ দেন। পলাতক জাহিদকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।

রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় প্রতারক হিসেবে ব্যাপকভাবে সমালোচিত জাহেদুল আলম জাহিদ(৫৫) ‘সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ, সিসিডিআর’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার সকল উপজেলা থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। এনজিওর নামে মাইক্রো ক্রেডিট বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প খুলে সঞ্চয়কারীদের সাথে এই প্রতারণা করেন তিনি। দ্বিগুন লাভের লোভ দেখিয়ে সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে এসব টাকা সঞ্চয় হিসেবে গ্রহণ করা হয়। জাহিদ সিসিডিআর এর নির্বাহী পরিচালক এবং রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি সর্ণটিলা এলাকার বাসিন্দা।

আদালত থেকে জানা গেছে সিসিডিআর নামকাওয়াস্তে সমবায় লাইসেন্স গ্রহণ করলেও কখনই সমবায় নীতিমালার তোয়াক্কা করেনি। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকায় সে রাঙামাটি শহরে একে একে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল। পরে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের সঞ্চয়ের মেয়াদ পূর্তির সময় সে লাপাত্তা হয়ে যায়। ২০১৭ সালে প্রতারণার শিকার এসব মানুষ তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ নানা রকম আন্দোলনে নামার পর জাহিদের কুকীর্তি জনসমুখখে আসে। আন্দোলনকারীদের দাবি জাহিদ প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অন্তত ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মামলার রায়ে জাহিদের প্রতারণার দুই সহযোগী আরিফুল ইসলাম ও তাপসী পালকেও দুই বছর করে কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই মাস কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবারই তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

প্রতারণার শিকার ৩১ জন গ্রাহকের পক্ষে ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এতে অভিযোগ করা হয়েছে ওই তিন প্রতারক পরস্পর যোগসাজসে রাঙামাটির স্বর্ণটিলায় অফিস স্থাপন করে সঞ্চয় ও ঋণ কর্মসূচির নামে ১১লাখ ৯৬ হাজার ৫৭০ টাকা আত্মসাৎ করেছে।