আসন্ন রাঙাামটি পৌরসভা নির্বাচনঃ রাঙামাটি ৩নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা করবেন যারা

381

॥ ইকবাল হোসেন ॥
আসন্ন রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে কাউন্সিলর প্রার্থীরা জনমত গঠনে দৌরঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। যারা আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর পুলক কান্তি দে, সাবেক কাউন্সিলর নেয়াজ আহমেদ, ব্যবসায়ী নেতা বিমল বড়ুয়া, আওয়ামীলীগ নেতা বিপ্লব দাশ মাইকেল, ব্যবসায়ী কৃষ্ণ কুমার ঘোষ বাঁশি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিল্টন বড়ুয়া।

পুলক কান্তি দেঃ
আসন্ন রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন বিষয়ে বর্তমান কাউন্সিলর পুলক কান্তি দে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- গত নির্বাচনে আমার ৩নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসী ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছিল। নির্বাচিত হওয়ার পরে ওয়ার্ডের রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সামাজিকভাবে মানুষকে বিভিন্নভাবে আমি সহযোগিতা করেছি। আগমীতে যদি ৩নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ আমাকে সুযোগ দেয়। তাহলে বর্তমানে আমার যে কাজগুলো অসমাপ্ত আছে সেই কাজগুলো সকলকে সাথে নিয়ে সমাপ্ত করার চেষ্টা করব।

তিনি আরো বলেন, পৌরসভার বর্তমান লাইটিং ব্যবস্থা মোটামুটি ভালো পর্যায়ে আছে। আর আগামীতে যদি আমি সুযোগ পাই তাহলে শতভাগ লাইটিং এর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। আর বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতা এবং সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সরকারের যে সহযোগিতা চালু আছে। সে সহযোগিতাগুলো সমাজের একদম তৃণমূল পর্যায়ে যে মানুষগুলো আছে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সহযোগিতা গুলোর ব্যবস্থা আমি করেছি এবং আগামীতেও সুযোগ পেলে করে যাব।

১৯৮৭ সালে বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের স্কুল কমিটিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবনে শুরু। এরপর ধাপে ধাপে আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের সাথে তিনি জড়িত আছেন। উল্লেখ্য- করোনা পরিস্থিতিতে তিনি সরকারি সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে জনগণের পাশে ছিলেন।

নেয়াজ আহমেদঃ
সাবেক কাউন্সিলর নেয়াজ আহমেদ’র সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নমিনেশন পেপার কিনব নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য। আমি ৩নং ওয়ার্ডের প্রত্যকটি এলাকার মানুষদের নিয়ে উঠান বৈঠক করব, যা আতিমধ্যে আমি শুরু করে দিয়েছি। এতে যদি দেখি আমাকে সমর্থন দেওয়ার বাস্তবতা ওদের মাঝে আছে। তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নিব। আর পূর্বে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে পারিবারিক ও সামাজিক কোন সালিশ বিচার থানা পর্যন্ত পাঠাইনি। সামাজিকভাবে সালিশ করে আপষের মাধ্যমে সমাধান করেছি।

একজন কাউন্সিলরের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হিসেবে পৌরসভায় নিজের এলাকায় লাইটিং এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। আমি যখন কাউন্সিলর ছিলাম তখন বিরোধী দলীয় মেয়র ছিলো তেমন বরাদ্দ ছিলোনা তাই রাজস্ব আয় থেকে লাইটিং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলমান রাখা হয়েছিল। অনেক সময় আমি নিজের পকেটের টাকায় লাইট কিনে লাইটিং ব্যবস্থা সচল রেখে আলোকিত রাখার চেষ্টা করেছি। আমি যেহেতু মানুষ ভুলত্রুটি হয়ে থাকতে পারে তাই আগামীতে জনগন যদি আমাকে রায় দেয় তাহলে জনগণকে আলোকিত ওয়ার্ড, পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড, সামাজিক উন্নয়ন এবং সমাজের ছোটখাট যে বিষয়গুলো নিয়ে সমস্যা হয়। যা মামলা পর্যন্ত যাওয়ার কোন বিষয় না তা আমি সামাজিক সালিশের মাধ্যমেই সমাধান করব, মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পরে।

মানুষ বিপদে-আপদে কাউন্সিলরকে পাশে চায়, আমি দায়িত্বে থাকাকালনি সময়ে মানুষের আমার কাছে আসতে হয়নি আমি ফোন পাওয়া মাত্র তাদের কাছে ছুটে গিয়েছি। চেষ্টা করেছি একজন জনপ্রতিনিধির কাছে জনসাধারণ যে সেবা প্রাপ্য তা পৌঁছে দিতে। ভবিষ্যতেও আমি এরূপ কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি গত নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। এবার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, ভোট ছিনতাই ও কারচুপি না হয় তাহলে আমি নির্বাচিত হব।
তিনি বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি জড়িত আছেন।

বিমল বড়ুয়াঃ
ব্যবসায়ী নেতা বিমল বড়ুয়ার সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সৃষ্টিকর্তা যদি আমাকে নির্বাচন করায় আর ৩নং ওয়ার্ডের জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে ৩নং ওয়ার্ডে কিছু কাজ অসম্পন্ন আছে, অনেক স্থানে পৌরসভার লাইট নাই আমি লাইটিং এর ব্যবস্থা করব। এছাড়াও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সরকারি বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা যথাযথ ভাবে বন্টন করব। তিনি আরো বলেন বর্তমানে আমি যেভাবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সাহায্য সহযোগিতা করছি তা নির্বাচিত হই বা না হই অব্যাহত থাকবে।

বিমল বড়ুয়া নিউ রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি, রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য, বড়ুয়া জনকল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।
বিপ্লব দাশ মাইকেলঃ

আওয়ামীলীগ নেতা বিপ্লব দাশ মাইকেল’র সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৩নং ওয়ার্ডের জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে- আমি ওয়ার্ডবাসীর সেবা, এলাকার উন্নয়ন করবো, সরকারি বরাদ্দ সমূহ সঠিকভাবে বন্টন করব যাতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাপ্যটা বুঝে পায়। ওয়ার্ডকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখব, সকল অলি-গলিতে লাইটিং এর ব্যবস্থা করবো, আমার ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত করব, যুবসমাজ যাতে সঠিক পথে থাকে সেজন্য তাদের নিয়ে কাজ করব, গরীব-দুঃখীদের জন্য সরকার কর্তৃক আসা সকল বরাদ্দ সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
বিপ্লব দাশ মাইকেল ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের স্কুল কমিটিতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। এরপর ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কৃষ্ণ কুমার ঘোষ বাঁশিঃ
ব্যবসায়ী কৃষ্ণ কুমার ঘোষ বাঁশি’র সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৩নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে আমার প্রধান কাজ হবে- ৩নং ওয়ার্ডকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা, লাইটিং ব্যবস্থার উন্নয়ন, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে জড়িত আছেন, করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তিনি ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি নিজ উদ্যোগে দীর্ঘদিন যাবৎ আসামবস্তি মহশ্মশানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ স্বেচ্ছায় করে যাচ্ছেন। এদিকে ছাত্রজীবন থেকেই তিনি খেলাধুলার সাথে জড়িত আছেন।

মিল্টন বড়ুয়াঃ
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিল্টন বড়ুয়ার সাথে আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- আমাকে যদি ৩নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচিত করে তাহলে আমি- জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করব, সরকারি সাহায্য সহযোগিতা সঠিকভাবে বন্টন করব, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও লাইটিং ববস্থা আরো উন্নত করব, সর্বোপরি আমার ওয়ার্ডকে একটি মডেল ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার তাই করবো।

তিনি আরো বলেন, আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে- পৌরসভা থেকে যে সম্মানী দেওয়া হয়, সেই সম্মানীর টাকা নিজে খরচ করবোনা। আমি একটি তহবিল করে ওই অর্থ দিয়ে গরীব-দুঃখীদের মাঝে বন্টন করে দিব। ছোটবেলা থেকে জনসেবা করে আসছি, আগামীতেও করে যাব। নির্বাচিত হলেও করব না হলেও জনসেবা চালিয়ে যাব।

আওয়ামী পরিবারের সন্তান মিল্টন বড়ুয়া স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন। তিনি সদর থানা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন- তিনি লেক ভিউ ক্লাব, তারুণ্যর জাগরণ, রিজার্ভমূখ স্পোর্টিং ক্লাব।