শামীমুল আহসান- ৩ মার্চ ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: এবরের একুশের বই মেলায় নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখ অন্যন্যদের সাথে রাজনীতিবিদ, কবি জাহানারা খান শেফু’র প্রথম কাব্য গ্রন্থ্য ‘জীবনের গান’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বই মেলার এই ঐতিহ্যবাহি মঞ্চে নবীন প্রবীনদের সাথে শেফু তার প্রথম বইটি প্রদর্শণ করতে পেরে ধন্য হয়েছেন বলে মনে করছেন।
৫৪টি কবিতা নিয়ে সাদ রায়হানের প্রচ্ছদ বিন্নাশে বইটি প্রকাশ করেছে দীপ্ত প্রকামনী। আর এ বইয়ের প্রকাশক হচ্ছেন, রিয়জুল ইসলাম। ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধরণ করে এর স্বত্ব রেখেছেন লেখক নিজেই। বইটি উৎস্বর্গ করা হয়েছে তার বাবা শিক্ষাগুরু মরহুম এইচ এস বানিজুর রহমান খাঁনের প্রতি। অবশ্য এর আগে তিনি ছাত্র থাকাকালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত সংকলনে তার গল্প-কবিতা নিয়মিত ছাপা হতো। এছারাও এবছর জানুয়ারির শেষের দিকে জাতীয় যাদুঘর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাহিত্য পত্রিকা জুঁই’র অংকুরিত প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত কবিতার লেখকদের মধ্যে কবি জাহানারা খান শেফুকে শ্রেষ্ঠ লেখকের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
কবি জাহানারা একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ, কবির জীবন দর্শণ, শিক্ষা জীবন, সংসার জীবন ও রাজনৈতিক দর্শণ- তার কাব্য গ্রন্থ ‘জীবনের গান’এ তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে কাব্যে অন্ত মেলাতে গিয়ে কবি অনেক যায়গায় ছন্দপতন ঘটিয়েছেন।
শেফুর বাবার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার ঘেচুয়া গ্রমে। ১৯৬৫ সালের ৭ জানুয়ারি নানার বাড়ি বাসাইল থানায় তিনি জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাগুরু মরহুম এইচ এস বানিজুর রহমান খাঁন টাঙ্গাইল জেলায় সেরা শিক্ষাবিদ হিসেবে স্বনাম ধন্য। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সুনামের কাদরিয়া বাহিনীর ট্রেজারারে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে শেফুর মা আসিয়া কানমের রান্না করা খাবার জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা এখনও স্বরণে রেখেছেন। কবি শেফুর স্বামীর বাড়ি ময়মনশিং জেলার ভালুকা থানার ভাটাজোর গ্রামের প্রতাবশালী তালুকদার বাড়ি। স্বামী আবদুর রউফ তালুকদার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
রাজনীতিবিদ-কবি জাহানারা খান বর্তমানে বাংলাদেশ কৃশক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বেসরকারী সংস্থা বিষয়ক সম্পাদক। ৭মত শ্রেনীতে পড়া লেখা করা অবস্থায়ই তিনি সাহিত্য চর্চা ও রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ৯বম শ্রেনীতে এসে তার জীবনের ছন্দপতন ঘটে। এসময় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধকে হত্যার কিছু দিনের মধ্যেই তার বিয়ে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি অদম্য এ নারী জাহানারা খান শেফু দশ বছর পর তার পারিবারীক প্রতিকুলতা ভেঙ্গে শশুরের সহযোগিতায় পুন:রায় লেখা-পড়া করে ১৯৮৬ সালে ‘জনতা উচ্চ বিদ্যালয়’ থেকে এসএসসি ও ১৯৮৮ সালে ‘ভাটাজোর সোনার বাংলা কলেজ’ থেকে এইচ এসসি পাশ করেন। আবার দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৪ সালে বড় ছেলের সাথে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে ভর্তি হয়ে ২০০৮ সালে বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জণ করেন। মা ছেলের একত্রে একই শ্রেনীতে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জণ করার নজীর খুব একটা মেলেনা। এক্ষেত্রে কবি জাহানারা অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।
ঢাকা ব্যুরো অফিস, দৈনিক রাঙাটি।