মেহেদী ইমামঃ
নানিয়ারচরে ওসি পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ওসি ও সাংবাদিক পরিচয়ে ইতোমধ্যে কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন অভিযোগ করেছেন। তারা জানায়, ওসি ও সাংবাদিক পরিচয়ে ভূয়া মেসেজ পাঠিয়ে এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে একটি চক্র।
এবিষয়ে নানিয়ারচর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. অর্জুন দেবনাথ বলেন, সোমবার দুপুরে ০১৭৯৯২৮২৫২৭ এই নাম্বার থেকে একটা কল আসে। সে সাংবাদিক পরিচয়ে আমার সাথে কথা বলে। আমি ওই সময় ইউএনও স্যারের সাথে ব্যস্ত আছি জানালে সে বলে ফোন না কেটে আগে তার সাথে কথা বলার জন্য। তার সাথে কথা না বললে আমার অনেক সমস্যা হবে বলেও হুমকি দেয়।
তিনি আরো জানান, রোববার দুপুরে আমার এক অফিস সহকারী কে নানিয়ারচর থানার ওসি পরিচয়ে ০১৮৯৪৩৭০৮০৬ এই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বলে ভুল করে তার নাম্বারের বিকাশ একাউন্টে ১৫হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। এই টাকা গুলো দ্রুত তার বিকাশে পাঠিয়ে দিতে।
প্রনতি চাকমা নামের ওই সহকারী এসময় টাকা চেক করে দেখার কথা জানালে সে ফোন না কেটে ম্যাসেজ চেক করতে বলে। প্রনতি চাকমা তার ম্যাসেজ অপশনে বিকাশ থেকে ১৫হাজার টাকা ক্যাশ ইন ম্যাসেজ দেখতে পায়। তখন ওই প্রতারক ফোন না কেটে দ্রুত টাকা পাঠিয়ে না দিলে তার চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি দিলে সে কনফিউজড হয়ে হুমকি ধামকির ভয়ে ১৫হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম জানান, আমার অফিসের অফিস সহকারী সুমেধ চাকমার কাছে ফোন করে ভূলে তার নাম্বারে টাকা পাঠানো হয়েছে বলে টাকা ফেরত চায় প্রতারক চক্র। ফোন না কেটে দ্রুত তাকে টাকা পাঠাতে বলে। বিষয়টি আমাকে জানালে আমি একাউন্ট চেক করে দেখার কথা জানাই। পরে সে দোকানে গিয়ে একাউন্ট চেক করে জানতে পারে এটি একটি প্রতারক চক্রের নাম্বার।
তিনি আরো জানায়, বদলিজনিত কারনে সদ্য বিদায়ী কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতানের নিকট কয়েকমাস আগে সাংবাদিক পরিচয়ে একটি ফোন আসে। ওই ব্যাক্তি জানায় তাদের এক সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছে। তাকে গ্রামের বাড়ি পাঠাতে টাকা প্রয়োজন। তাই দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে এবং ওই কর্মকর্তা না বুঝে টাকা পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর অফিস সহকারী মোঃ শাহজাহান জানান, ০১৮৯৪৩৭০৮০৬ এই নাম্বার থেকে ওসি পরিচয়ে তার কাছে কল আসে। সে কি দায়িত্ব পালন করছে? এখন কি সে বাসায় না অফিসে এসব উদ্ভট প্রশ্ন করে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
একই নাম্বার থেকে ফোন করে যুব উন্নয়ন অফিস সহকারী জোসনা ময় চাকমা চাকমার কাছে ওসি পরিচয়ে টাকা চাওয়া হয়। নাহয় তার চাকুরীতে সমস্যা হবে বলেও জানায়। জোসনাময় চাকমা ঔদিন ধর্মীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় তার সহকর্মীদের ওই নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলেন। কিন্তু তারা বিষয়টি বুঝতে পেরে আর টাকা পাঠাননি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নানিয়ারচর থানার ওসি সুজন হালদার জানান, নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের বেশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিকট আমার নামে ফোন করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। বিষয়টি একটি প্রতারক মহলের কাজ। সকলে সচেতন থাকবেন। এবিষয়ে আমি একটি জিডি করেছি এবং আইনি প্রক্রিয়া চলমান।