করোনায় বিরানভূমি হয়ে গেছে বিশ্ব পরিচিত স্রোতস্বিনী সুবলং ঝর্ণা

345

॥ শহিদুল ইসলাম হৃদয় ॥
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমী পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। দেশ-বিদেশি পর্যটকের পছন্দের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠার দরুন রুপের রাণী রাঙামাটি নামে পরিচিত পর্যটকদের কাছে। হ্রদ ও পাহাড়ে ঘেরা এই জেলায় ভরা মৌসুমে দেশ-বিদেশি পর্যটকে ভরপুর দেখা যাওয়া সহ প্রতিনিয়ত ভ্রমণ পিপাসুদের আগমনে মুখরিত থাকে এই জেলাটি।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ভীর জমায় এখানকার বেশ কিছু টুরিস্ট স্পর্ট গুলোতে যার মধ্যে অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান সুবলং ঝর্ণা। রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলায় অবস্থিত প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি ঝর্ণাটি ইতোমধ্যেই সকল পর্যটকের মনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এছাড়াও ঝর্ণার হীম শিতল ঠান্ডা পানিতে ছোট-বড় সকলকেই মনপ্রাণ উৎসর্গ করে প্রকৃতির সাথে মিশে সৌন্দর্য উপভোগ করা প্রতিদিনের দৃশ্য যেনো নজর কাড়ার মত।

প্রতিবেদক রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলা থেকে ফেরার পথে হঠাৎ চোখ পড়ে সুবলং ঝর্ণার দিকে এসময় তাৎক্ষণিক মনে এক প্রবাদের সৃষ্টি হয় “ঝর্ণাটি যেনো জন মানবহীন দাঁড়িয়ে মানুষের আগমনের প্রহর গুনে গুনে খালি পাথরে অশ্রু ঝরাচ্ছে”।

উক্ত প্রবাদটি সৃষ্টির মূল কারণ, কোনো এক সময় যে ঝর্ণায় মানুষের কৌলাহলে মেতে থাকতো, বর্তমানে সূর্যের আলোক রশ্মিতে চক চক করা ঝর্ণার পানির জলরাশি ধারাবাহিকভাবে পাহাড়ের গা বেয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ছে কিন্তু এই সৌন্দর্য উপভোগ করার মত কেউ নেই।

এদিকে, দেশে চলমান দুর্যোগ করোনা ভাইরাসের কারণে সারা দেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও সব পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বুধবার (১৮ মার্চ) রাত নয়  টায় এ তথ্য জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারি এবং প্রশাসনিক নির্দেশনায় যেমন টুরিস্টের আগমন বন্ধ অপরদিকে স্থানীয়রাও সরকারি ও প্রশাসনিক নির্দেশমতে উক্ত ভাইরাসের হাত থেকে রেহায় পেতে ঘরে অবস্থান করছে। ফলে সুবলং ঝর্ণার বর্তমান সৌন্দর্য হতে বঞ্চিত সকলেই।

অন্যদিকে স্থাণীয়রা বলেন, আমরা রাঙামাটি শহরে বসবাস করলেও এখানকার সৌন্দর্য আমাদের কাছে কখনো পুরাতন মনে হয়নি কারণ কাজের ফাঁকে যখন ক্ষণিকের আনন্দ পেতে ঘুরতে বেরই তখন কাপ্তাই লেক ও পাহাড়ের মিশ্র হাওয়ার পরশ শরীরে লাগার সাথে সাথে সারাদিনের ক্লান্তি ভাব টুকু হাঁড়িয়ে যাই। এবং আমরা সাধারণত সময় কাটাতে শহরের আশেপাশে অবস্থিত যেমনঃ পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, ডিসি পার্ক, আরণ্যক, সুবলং ঝর্ণা, বরগাং কাপ্তাই ইত্যাদি পর্যটক স্পর্ট গুলোতে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে যাওয়া হয়।

একটা কথা নাবললেই নয় আমরা দেশের বিভিন্ন টুরিস্ট স্পর্ট পরিদর্শণ করে রাঙামাটির মত সুন্দর এবং ভালো লাগার মত মনোরম পরিবেশ আমাদের আর কোথাও চোখে পরেনি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা কোথাও যেতে পারছিনা তাই বলে আমাদের মনে কোনো দুঃখ নেই কারণ সরকার,  প্রশাসন এবং ডাক্তাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যেভাবে দেশের মানুষকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আগলে রাখছেন।

তদ্রুপ আমাদেরও স্ব স্ব স্থান থেকে তাদের সহযোগিতা করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। কারণ এই দুর্যোগ আমাদের দেশের আমরা যেহেতু এ দেশের নাগরিক আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পারে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে এবং সৃষ্টিকর্তা যেনো বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বথেকে এই ভাইরাসের বিনাশ করে সকলকে আগের মত স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন এটাই একমাত্র কামনা।