রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় কর্মসংস্থানের অভাবে দিন দিন বেকার সমস্যা বেড়েই চলছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে হাজার হাজার লোকের বসবাস। চাষ- আবাধের জন্য কিছু জমি থাকলেও আর সব খালী পাহাড় যেখানে এক সময় প্রাকৃতিক সম্পদ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পালা ছন কাঠ ভরপুর ছিল। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আজ আর সে সব নেই।
সব মানুষ তার চাহিদার তাগিদে কেটে বিক্রি করে খেয়ে পরে দিন অতিবাহিত করলেও এখন আগের মতো আর সেই গাছ পালা ছঁন গোল পাতা আর নেই। এখন খালী পাহাড় গুলি শুধু বিরান ভূমিতে পরিনত হয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে আছে।
জানা যায়, কাউখালী উপজেলায় শুধুমাত্র ঘাগড়া এলাকায় একটি রাঙামাটি টেক্সটাইল মিল আছে যেখানে শুধু মাত্র সামান্য কিছু লোকের কর্মের সংস্থান থাকলেও হাজার হাজার লোকের কোন কর্মসংস্থানের মতো তেমন কোন ব্যাবস্থা নাই। যার ফলে অনেক লোক কর্মের সন্ধানে উপজেলার বাহিরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কর্ম খোঁজে নিচ্ছেন।
যদিওবা এলাকায় কিছু লোক চাষাবাদ করেন বাকিরা কেউ পাহাড়ে গিয়ে আদা,হলুধ,ঝুমচাষ করেন এবং অনেকে পাহাড়ে সামান্য বাগান করে যেমন সেগুন,গামারী,কড়াই,পেপে চাষ করে, কলা চাষ করে কোন রকমে বেচেঁ আছেন। আবার কেউ এলাকায় রিক্সা, ভ্যান গাড়ি, অটোরিক্সা চালিয়ে, কেউ বা দিন মুজুরের কাজ করে কোন রকমে বেচেঁ আছেন।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেতবুনিয়া, গুইয়াতল, সুগারমিল,কলমপতি,নাইল্যাছড়ি, তারাবুনিয়া, উপজেলা সদর, ঘিলাছড়ি, ঘাগড়া, কাশখালীসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন কর্মের হতাশায় ভুগছেন। কথা হয় মোঃ নয়ন মিয়া, সৌমেন চাকমা, মোঃ আসাদ, রুইলা প্রু মারমা, সুইমা প্রুদের সাথে।
সবার একই কথা আমাদের এলাকায় বার মাস কোন চাষ হয়না। তা ছাড়া এলাকায় সব সময় তেমন কোন কাজ থাকেনা । যার কারনে আমাদের অনেক সময় কাজের সন্ধানে বিভিন্ন এলাকায় কাজের সন্ধানে ছুটাছুটি করতে হয়। কাজ না পেলে অনেক সময় ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক সময় আমাদের উপাস করে থাকতে হয়।
আবার অনেকে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম, ঢাকায় চলে গিয়েছেন আমাদের কাউখালী উপজেলায় কর্মসংস্থানের মতো কোন শিল্প কারখানা না থাকায় আমাদের এখানের মানুষ দিন দিন বেকার হয়ে পড়ছেন। আগে পাহাড়ে অ-প্রতুল বাশঁ, গাছ ছিল যার কারনে এক সময় এই এলাকায় মানুষের কর্মের তেমন কোন সমস্যা ছিলনা। আজ কর্মের অভাবে এলকার মানুষ খুবই কষ্টের মধ্যে আছেন বলা চলে এলাকায় নিরব দুর্বিক্ষ চলছে।
এ ব্যাপারে কথা হয়, কাউখালী উপজেলার ৩নং ঘাগড়া ইউপি’র সাবেক মহিলা মেম্বার জোসনা বেগমের সাথে।
তিনি বলেন সরকার আমাদেরকে সরকার কর্তৃক পুর্বে পুনবার্সিত পরিবারকে যে জায়গা/পাহাড় কবুলিয়ত মুলে ঘিলাছড়ি আদর্শ গ্রামে দিয়েছিল সেখানে যদি আমরা প্রতিটি পরিবার এবং কাউখালী উপজেলার যে সকল জায়গায় সরকার কর্তৃক পুনবার্সিত পরিবারকে কবুলিয়ত মুলে জায়গা দেয়া হয়েছে সেখানে যদি আমরা বসবাস করতে পারতাম এবং বিভিন্ন ফলজ, বনজ বাগান বা চা বাগান করতে পারতাম তাহলে আমাদের এলাকার কোন পাহাড়ী/বাঙালী লোকজন বেকার থাকতো না।
তিনি আরো বলেন সরকার কর্তৃক দেয়া ঘিলাছড়ি শামুকছড়ি আমাদের পুনর্বাসিত পরিবারদের জায়গা ঘাগড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জোর করে দখল করে মাছের প্রজেক্ট তৈরী করে এলাকায় বিশৃংখলা সৃষ্ঠি করার পায়তারা করে চলছেন বলে তিনি জানান।
অপরদিকে কাউখালী বেকারত্বের হাত থেকে বাচার জন্য লোকজন কিছু কিছু নিজস্ব পাহাড় বা টিলায় বনজ,ফলজ বাগান করলেও তা গত ১৩ জুনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নষ্ঠ হয়ে যায়। ক্ষতি হয় কয়েক হাজার কয়েক লক্ষ টাকার বাগান। যার ফলে উপজেলার প্রায় এলাকায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়
সেই সাথে মানুষ এখন সেই দুর্ভোগ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারছেনা। তাই এ ব্যাপারে উপজেলার সচেতন মহলের একটাই দাবি সরকারের উর্দ্বোতন প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের কাছে কাউখালী উপজেলায় এলাকার মানুষের বেকারত্ব দুরীকরণে কর্মসংস্থানের জন্য শিল্প-কারখানা স্থাপন পাশা পাশি চা-বাগান, রেশম বাগান, বনজ, ফলজ বাগান, পর্যটন কর্পোরেশনের মাধ্যমে পর্যটন স্পট করা তাতে অত্র উপজেলার বেকারত্ব দুর হওয়ার পাশা পাশি হাজার হাজার লোকের বেকারত্ব দুর হওয়ার সাথে ফিরে
আসবে এলাকায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। এটাই এখন অত্র উপজেলা বাসির একমাত্র চাওয়া।