কাপ্তাইয়ের জেটিঘাট সড়কে খানাখন্দে নিরন্তর ভোগান্তি

391

॥ নূর হোসেন মামুন ॥
কাপ্তাইয়ের জেটিঘাট সড়কজুড়ে ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে জমে আছে পানি। কাদাপানিতে একাকার সড়কে গাড়ি চলে হেলেদুলে। কিছু স্থানে অস্তিত্বই নেই পিচ ঢালাইয়ের। দিন দিন সড়কটির অবস্থার অবনতি হয়ে এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বুধবার (৪ই নভেম্বর) দুপুরের এ চিত্র প্রতিদিনের। তবে প্রতি শনিবার সাপ্তাহিক হাট বাজারে হাজারও মানুষের উপস্থিতিতে দূর্ভোগ বৃদ্ধি পায় আরও।

এলাকাবাসী জানায়, মাছ-গাছ-বাঁশসহ সকল পরিবহণের প্রধান মাধ্যম সড়কটি। আশেপাশে রয়েছে বাজার, মাদ্রাসা, সরকারি অফিস, মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। জেটিঘাট সড়ক ঘিরে গড়ে উঠা কাপ্তাইয়ে সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক হাটবাজারে ৪ শতাধিক দোকানে প্রতি শনিবার সমাগম হয় হাজারো মানুষের। বাণিজ্যিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলেও জেটিঘাট এখন সড়কের খানাখন্দের ফলে নিরন্তর ভোগান্তির উৎস্য হিসেবে পরিচিত।

ছোট বড় গর্তে শুধু পরিবহণ নয়, পায়ে হাটাও মুশকিল। জেটিঘাট সড়কের এমন দূর্ভোগে হাটে ক্রেতা কমায় বিক্রেতাদের বেশিরভাগ কাঁচা তরকারি অবিক্রিত রয়ে যায়। ফলে বিকল্প হিসেবে নতুন বাজারের ‘বৌ বাজার’ এ প্রতি শনিবার বিকেলে সিংহভাগ পণ্য নিয়ে দোকান সাজান কাঁচা তরকারি বিক্রেতাগণ। সেখানেই সব পণ্য-সবজি বিক্রয় শেষে রাতে স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরেন তারা।

কাপ্তাইয়ের জেটিঘাট হাটের ঠিকাদার মো. নাছির উদ্দিন জানান, প্রতি বছর ৮ লক্ষধিক টাকা রাজস্ব নিলেও বছরের পর বছর সড়কের উন্নয়নের কাজ করেনি কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

কাপ্তাই কাঠ ব্যবসায়ী বহুমূখী সমবায় সমিতির সা. সম্পাদক ফয়জুল হক জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারও মানুষের চলাচল। এ সড়ককে কেন্দ্র করে মাছ-গাছ-বাঁশ সহ নানান খাতে প্রতিদিন কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে থাকে। সড়কের এমন দূর্ভোগ নিয়ে পিডিবি, এলজিইডি, সড়ক ও জনপদ বিভাগকে বহুবার লিখিত দিয়েও কোন সমাধান পাইনি।

কাপ্তাইয়ের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেন জানান, কাপ্তাইয়ে বর্তমানে যত পর্যটকই আসুক, এ সড়কে অবশ্যই আসতে হয়। কিন্তু সড়কের এমন বেহলায় দশায় দূর্ভোগ আর হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরেন পর্যটকগণ। এ সড়কের উন্নয়ন হলে বাড়তে পারে আরও পর্যটক।

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সড়কটি দূর্ভোগের তথ্য শুনেছি। তবে সড়টি পিডিবির আওতাধীন থাকায় এ সড়কের উন্নয়নে কাজ করা সম্ভব হয়নি।

কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, সড়কটির উন্নয়নে বহুবার লিখেছি। এলজিইডি বলেছেন এটা তাদের আওতায় নয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলেছেন কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের অংশ শেষ হওয়ায় এটি তাদের নয়। শেষ পর্যন্ত রাঙ্গামাটির মাননীয় সাংসদ দীপংকর তালুকদারের চেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সড়কটির উন্নয়নে কাজ করবে বলে জানান।

এর মধ্যে উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীগণ সড়ক উন্নয়নে পরিকল্পনা ও মাপ-ঝোপের কাজ সম্পন্ন করেছেন। নিশ্চয় খুব দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন শেষে সড়কের উন্নয়নে কাজ শুরু করা হবে।