কাপ্তাই হ্রদের পানি কমানোর দাবিতে নানিয়ারচরে বিক্ষোভ

326

p......5

স্টাফ রিপোর্টার , ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি :  কাপ্তাই হ্রদের পানি কমানোর দাবিতে নানিয়রচর উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে জলেভাসা জমির পাহাড়ি চাষীরা। সোমবার সকাল ১১টায় জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় ভুমিরক্ষা কমিটি ও জলেভাসা জমির কৃষকবৃন্দের ব্যানারে এসব কর্মসুচি পালন হয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে নানিয়ারচর বাজার ঘুরে আবারো উপজেলা পরিষদের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে চার দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়। নানিয়ারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয় কৃষ্ণ চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বুড়িঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রমদ বিকাশ খিসা, সাবেক্ষং ইউপি চেয়ারম্যান সুশীল জীবন খিসা, নানিয়ারচর ইউপি মেম্বার শান্ত্র চাকমা, ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নানিয়ারচর উপজেলা সভাপতি রিপন চাকমা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী কৃষক চিত্তরঞ্জন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, চলতি বছরে কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমানোর কারণে জলেভাসা জমি ভেসে না উঠায় জলেভাসা জমির উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার চাষি মানবেতর জীবন যাপন করছে। এবছর চাষবাদ করতে না পারলে এসব কৃষি পরিবারগুলোর জীবনে চরম অর্থনৈতিক দূর্যোগ নেমে আসবে। বক্তারা অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গাবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে বলেছিলেন পাহাড়িদের ভাতে মারবো, পানিতে মারবো। বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমিয়ে পাহাড়ি কৃষকদের ভাতে ও পানিতে মারার ষড়যন্ত্র করছে। বক্তারা আরো অভিযোগ করেন প্রায় এক লক্ষ মানুষকে উদ্ভাস্তু করে কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে এ হ্রদ সৃষ্টি করা হয়। তখনও পাহাড়িরা এ বাঁধের বিরোধিতা করেছিলো। সে সময় সরকার যে পরিমান ক্ষতি পূরণ দেয়ার কথা ছিলো সরকার সে পরিমান ক্ষতি দেয়নি। এখন সরকারের অবস্থা দেখে বোঝা যায় কাপ্তাই হ্রদের মাধ্যমে সরকার পাহাড়িদের উচ্ছেদ করতে চায়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়। কাপ্তাই হ্রদের জলেভাসা জমির উপর কয়েক হাজার কৃষি পরিবার নির্ভরশীল। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে হ্রদের পানি কমতে থাকলে জানুয়ারী থেকে চাষাবাদ শুরু করেন চাষিরা এবং বর্ষা মৌসুমের শুরুর আগে ফসল তোলে। দেরিতে পানি কমলে দেরিতে বোরো ধান লাগানোর কারণে তা বর্ষা মৌসুমে আবারো হ্রদের পানি বেড়ে তলিয়ে যায়। তখন চাষীয়রা মারাত্মকভাবে ক্ষতির শিকার হন।

গত ২০১৩ সালে হ্রদের পানি কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেয়া হলে ১৪-১৫ সাল পর্যন্ত হ্রদের পানি যথা সময়ে কমানো হয়। কিন্তু এবছর আবারো যথাসময়ে হ্রদের পানি না কমিয়ে জলেভাসা জমির চাষিদের ক্ষতির মুখে ফেলা দেয়া হয়েছে। স্মারক লিপিতে চার দফা দাবি দেয়া হয়। দাবিগুলো হলোঃ ১. প্রতি বছর নভেম্বর মাসে হ্রদের পানি কমানো। ২. জলে ভাসা জমির ফসলের অবস্থা বিবেচনা করে হ্রদের পানির স্তর বাড়ানো ও কমানোর ব্যবস্থা করা। ৩. হ্রদের পানি না কমানোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়া ও ৪.জলেভাসা জমির মালিকগণের সাথে আলোচনা করে হ্রদের পানি বাড়ানো ও কমানোর নীতিমালা তৈরী করা।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান