কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়াতে মৌজা প্রধানদের নিয়ে মতবিনিময়

330

॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥

পার্বত্য চট্টগ্রাম কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ ও পূনর্বাসন প্রকল্প দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ এর বান্দরবান শাখা অফিসের আয়োজনে কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৌজা হেডম্যানদের (মৌজা প্রধান) নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের উজানী পাড়া স্থানীয় এনজিও গ্রাউস এর কনফারেন্স রুমে সচেতনতামূলক এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন মৌজার হেডম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণে মৌজা হেডম্যানদের মাধ্যমে পাড়া বা গ্রামের কার্বারী ও জনগণকে সচেতনতার উদ্দেশ্যে হেডম্যানরা কি ভূমিকা রাখতে পারে সমাজে এমন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির ২৬৭নং মন্ডুং মৌজার হেডম্যান নুরুল হক, কুহালং ইউনিয়নের ৩১৮নং মৌজা হেডম্যান প্রুমংউ মার্মা, লামা উপজেলার ২৯৭নং পোপা মৌজার হেডম্যান মোহন ¤্রাে, ৩০২নং লুলাইং মৌজা হেডম্যান সিংপাশ চৌধুরী, সদর উজেলার ৩৪৭নং মুরুক্ষ্য মৌজা হেডম্যান মংপু মার্মা, প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা (প্রকস) নির্বাহী পরিচালক জর্জ ত্রিপুরাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন, দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর বান্দরবান জেলা অফিসের কর্মকর্তা পায়েল বম।

অনুষ্ঠানে পায়েল বম তার সঞ্চালনার প্রথমে কুষ্ঠ রোগ নিয়ে এলাকায় মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে বলেন। রোগটিকে মানুষ গোপন রাখার চেষ্টা করে। মানুষের মধ্যে রোগের কারণ, বিস্তার, সংক্রমন, আরোগ্য লাভ সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকার কারণে এই রোগ সম্পর্কে প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত আছে। এই কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে মৌজা প্রধান বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
সচেতনতা মূলক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত লামা উপজেলার ২৯৭নং পোপা মৌজার হেডম্যান মোহন ¤্রাে বলেন, সমাজে মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা এখনো বিরাজ করছে। কুষ্ঠ রোগ হলে মানুষ কোথায় সাহায্য নেবে সেই ধারণা নেই। এখানে আসার পর তাঁরও বিরাট অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে তিনি জানান। মৌজার কার্বারীদের নিয়ে এই বিষয়ে ধারণা দিতে তিনি চেষ্টা করবেন বলে জানান।

এছাড়া মতবিনিময় সভায় জর্জ ত্রিপুরা বলেন, বিভিন্ন কারণে প্রতিবন্ধী হওয়া ব্যক্তিরাও সমাজের একটি অংশ। তাদেরকে অবহেলা করে বা পিছিয়ে রেখে দেশ উন্নয়ন করতে পারে না। তাই সরকারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিবন্ধীদেরকে কিভাবে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো যায় এবং পূনর্বাসন করা যায় সেই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রথাগত প্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তার জন্য সবাই সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি তুলে ধরেন। তাই মৌজা প্রধানদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

নাইক্ষ্যংছড়ির ২৬৭নং মন্ডুং মৌজার হেডম্যান নুরুল হক বলেন, মানবিক কারণে সমাজের অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধীদের আপন করে নিতে হবে। তাদের পূনর্বাসন করে সমাজ ও দেশ উন্নয়ন এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান।